ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

ভ্যাকসিন বিতরণে কানাডার অন্টারিও সরকারের এথিক্যাল ফ্রেমওয়ার্ক

আহসান রাজীব বুলবুল | প্রকাশিত: ১০:১৫ এএম, ১১ জানুয়ারি ২০২১

অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনার টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে কানাডার বিভিন্ন প্রদেশে। তবে এখন পর্যন্ত টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে পিছিয়ে আছে অন্টারিও প্রদেশ। সেজন্য ভ্যাকসিন বিতরণের এথিক্যাল ফ্রেমওয়ার্ক প্রকাশ করেছে প্রাদেশিক সরকার।

প্রদেশজুড়ে ভ্যাকসিন বিতরণে আরও সুনির্দিষ্ট অগ্রাধিকার নির্ধারণের দিক-নির্দেশনা রয়েছে এ ফ্রেমওয়ার্কে। ভ্যাকসিন বিতরণ বিষয়ক টাস্কফোর্সের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ফ্রেমওয়ার্কটি প্রণয়ন করা হয়েছে।

টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান জেনারেল (অব.) রিক হিলার বলেন, ‘অন্টারিওবাসীর কাছে আমাদের প্রতিশ্রুতির পরিষ্কার নিদর্শন হচ্ছে এ এথিক্যাল ফ্রেমওয়ার্ক। আমরা জানি, জনগণ ভ্যাকসিন নিতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। নৈতিক ও কার্যকরভাবে এটি সম্পন্ন করতে ফ্রেমওয়ার্কটি সহায়তা করবে।’

অন্টারিওতে তিন ধাপের ভ্যাকসিনেশন পরিকল্পনার প্রথম ধাপ শুরু হয়েছে গত ১৫ ডিসেম্বর। প্রাথমিকভাবে দুটি হাসপাতালে এ কার্যক্রম শুরু হলেও পরবর্তীতে ১৭টি হাসপাতালে তা সম্প্রসারণ করা হয়। এখন পর্যন্ত ফাইজার-বায়োএনটেকের ৯০ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন হাতে পেয়েছে অন্টারিও সরকার। হেলথ কানাডার অনুমোদনের পর মডার্নার কাছ থেকেও ৫০ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন পাচ্ছে অন্টারিও।

টাস্কফোর্সের সদস্য ডা. ডার্ক হায়ার বলেন, টাস্কফোর্সের প্রধান লক্ষ্য হলো কার্যকর ভ্যাকসিন অন্টারিওবাসীর মধ্যে নিরাপদে, স্বচ্ছভাবে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিতরণ করা। এথিক্যাল ফ্রেমওয়ার্কটি ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার নির্ধারণে সহায়তা করবে।

ফ্রেমওয়ার্কের প্রধান উদ্দেশ্যের মধ্যে আছে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত অসুস্থতা ও মৃত্যু কমিয়ে আনার পাশাপাশি সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের সুরক্ষা দেয়া। কোনো ধরনের পক্ষপাত ছাড়াই ভ্যাকসিন বিতরণ নিশ্চিত করাও এর উদ্দেশ্য। অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত গ্রুপের সবাই যাতে একই সুবিধা পায়, সেটা নিশ্চিত করাও ফ্রেমওয়ার্কটির লক্ষ্য। সর্বোপরি ভ্যাকসিন বিতরণে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা ফ্রেমওয়ার্কটির অন্যতম উদ্দেশ্য।

অন্টারিও সরকার বলছে, অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রথম গ্রুপের সবাইকে মার্চের মধ্যে ভ্যাকসিনের আওতায় আনা সম্ভব হবে বলে তারা আশাবাদী। এরপর অন্যান্য গ্রুপের মানুষদের মধ্যে ভ্যাকসিন বিতরণ শুরু হবে।

ডা. ডার্ক হায়ার বলেন, পরবর্তী ধাপে কারা অগ্রাধিকার পাবে তা নির্ধারণে আলোচনা চলছে।

এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে মোট ৪ লাখ ২৪ হাজার হাজার ৫০ ডোজ টিকা হাতে পেয়েছে কানাডা। এগুলো আনা হয়েছে ফাইজার এবং মডার্নার কাছ থেকে। মঙ্গলবার পর্যন্ত পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দেশটিতে টিকা পেয়েছেন ১ লাখ ৪৮ হাজার মানুষ।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো জানান, জানুয়ারির মধ্যে কানাডায় ১০ লাখ ডোজ টিকা এসে পৌঁছবে। জনপ্রতি দুটি করে পাঁচ লাখ নাগরিককে জানুয়ারির মধ্যেই টিকা দেয়া যাবে। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশের প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের জন্য করোনাভাইরাসের টিকা নিশ্চিত করা হবে।

উল্লেখ্য, কানাডায় আনুষ্ঠানিকভাবে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয় গত ১৪ ডিসেম্বর। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, কানাডায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৬ লাখ ৬০ হাজার ২৮৯জন, মারা গেছেন ১৬ হাজার ৯৫০ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ৫৮ হাজার ৭৭২ জন।

দেশটির অন্টারিও, ব্রিটিশ কলম্বিয়া, আলবার্টা এবং কুইবেক প্রদেশে নাটকীয়ভাবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আর করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে হাসপাতাল, নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে ব্যাপকহারে চাপ পড়ছে। সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ সরকারি বিভিন্ন বিধি-নিষেধ দেয়া সত্ত্বেও পরিস্থিতি কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।

এসএস/জেআইএম