কানাডায় করোনায় মৃত্যু সাড়ে ১৬ হাজার ছাড়াল
কানাডায় করোনাভাইরাসে মৃত্যু সাড়ে ১৬ হাজার ছাড়িয়েছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ১৬ হাজার ৫৭৯ জনের। আর আক্রান্ত হয়েছেন ছয় লাখ ৩৫ হাজার ১৩৪ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন পাঁচ লাখ ৩৮ হাজার ২৬৭ জন।
কানাডার প্রধান চারটি প্রদেশ অন্টারিও, বৃটিশ কলম্বিয়া, আলবার্টা এবং কুইবেকে নাটকীয়ভাবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে হাসপাতাল ও নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে ব্যাপকহারে চাপ পড়ছে। সংক্রমণ রোধে কানাডার বিভিন্ন প্রদেশে কড়াকড়ি নজরদারি চলছে।
লোকসংখ্যার দিক থেকে কানাডার বৃহত্তম প্রদেশ অন্টারিওতে প্রতিদিনই প্রচুর সংখ্যক করোনা আক্রান্ত রোগীর খবর পাওয়া যাচ্ছে। গত ২৫ ডিসেম্বর শুক্রবার থেকে ক্যুইবেকে আবার লকডাউন শুরু হয়েছে। ফার্মেসি ও গ্রোসারি শপ ছাড়া সব বন্ধ থাকবে। ক্যুইবেকের জনসাধারণকে বলা হয়েছে, একান্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া গ্রোসারি শপগুলোতে কেউ যেন না যান। রেস্টুরেন্টগুলো শুধু টেকআউট এবং ড্রাইভথ্রো খোলা থাকবে, তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। পুলিশ, স্বাস্থ্য পরিদর্শকরা কড়াকড়িভাবে নজরদারিতে রয়েছেন।
অন্যদিকে কানাডার ক্যুইবেকে আক্রান্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ। ক্যুইবেকের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ক্রিশ্চিয়ান ডুবে নাগরিকদের সতর্ক করে বলেছেন, ‘অনেক হাসপাতালের অবস্থা সামর্থ্যের সক্ষমতা ছাড়িয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে এবং হাসপাতাগুলোতে সক্ষমতা ছাড়িয়ে যাওয়ার কারণে হোটেল ও রিসিপশন হলগুলোতে রোগীদের জন্য বিশেষ বেড স্থাপন করা হচ্ছে।’
ব্রিটিশ কলম্বিয়াতে করোনা মহামারির দ্বিতীয় পর্যায়ে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। সামাজিক দূরত্ব, স্বাস্থ্যবিধি, সরকার কর্তৃক বিভিন্ন বিধিনিষেধ দেয়া সত্ত্বেও সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।
আলবার্টায় ক্রমবর্ধমান হারে করোনা বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসপাতাল ও নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রগুলোতে চাপ পড়ছে। আলবার্টার প্রিমিয়ার জেসন কেনি শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘নাগরিকদের আগামী ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।’
ইতোমধ্যে কানাডায় টিকা প্রয়োগ শুরু হয়েছে। এরপরও করোনা নিয়ন্ত্রণে অনেক ক্ষেত্রেই হিমশিম খেতে হচ্ছে নীতিনির্ধারকদের। কানাডায় আনুষ্ঠানিকভাবে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে গত ১৪ ডিসেম্বর। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ভ্যাকসিনের পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব ও মাস্ক ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই।
অন্যদিকে কানাডায় করোনার নতুন ধরনের সংক্রমণের খবরে বিভিন্ন শহরে বসবাসরত বাংলাদেশিদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এই আতঙ্কের মধ্যেই কানাডার বিভিন্ন প্রদেশে করোনার নতুন ধরনে আক্রান্তের খবর পাওয়া যাচ্ছে। কানাডায় প্রথম দুইজনের শরীরে নতুন ধরনের করোনা শনাক্ত হয়। পরে আলবার্টায় যুক্তরাজ্য থেকে আগত এক ব্যক্তির শরীরে নতুন ধরন পাওয়া যায়।
সম্প্রতি অন্টারিওতে আরো তিনজনের শরীরে করোনার নতুন ধরণের সন্ধান পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, ওই তিনজনের ভ্রমণের ইতিহাস আছে বা ভ্রমণকারীদের সংস্পর্শে এসেছে। অন্টারিওর চিকিৎসা কর্মকর্তা ডাক্তার বারবারা বলেন, ওই তিনজনের দুইজন সম্প্রতি যুক্তরাজ্য থেকে ফিরেছেন।
যুক্তরাজ্যে নতুন ধরনের করোনাভাইরাসের সংক্রমণের পর কানাডাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। কানাডাও ইতোমধ্যেই যুক্তরাজ্যের সঙ্গে সব ধরনের ফ্লাইট চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
ইএ/এমএস