আমিরাতের মতো মরক্কোকে ১০০ কোটি ডলারের অস্ত্র দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিককরণ চুক্তির পরপরই মরক্কোর কাছে ১০০ কোটি (এক বিলিয়ন) মার্কিন ডলার সমমূল্যের অস্ত্র বিক্রি করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইতোমধ্যেই দেশটির কংগ্রেসে এ সংক্রান্ত একটি নোটিশ পাঠিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
বেনামি সূত্রের বরাতে শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। সূত্রের মতে, মরক্কোকে চারটি ড্রোন এবং দূর-নিয়ন্ত্রিত গোলাবারুদ দেবে যুক্তরাষ্ট্র।
গত বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মরক্কো-ইসরায়েল সম্পর্কোন্নয়ন চুক্তির প্রশংসা করার পরপরই প্রথমবারের মতো অস্ত্র বিক্রির খবর প্রকাশ করে রয়টার্স।
পরে অনেকটা একই তথ্য জানায় প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গও। তাদের খবর অনুসারে, মরক্কোকে চারটি ড্রোন এবং লেজার নিয়ন্ত্রিত গোলাবারুদ দেয়ার কথা যুক্তরাষ্ট্রের।
কোনও দেশের কাছে অস্ত্র বিক্রির আগে কংগ্রেসের অনুমতি নিতে হয় মার্কিন প্রশাসনকে। বিষয়টি পুনর্মূল্যায়ন করে অস্ত্র বিক্রি আটকে দেয়ার ক্ষমতা রয়েছে কংগ্রেসের। তবে মরক্কোর ক্ষেত্রে তেমন কিছু ঘটবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
সম্প্রতি ওয়াশিংটনের মধ্যস্থতায় ইসরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সম্পর্কোন্নয়ন চুক্তিতেও এধরনের অস্ত্র বিক্রির শর্ত ছিল। চুক্তি অনুসারে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির কাছে ২৩ বিলিয়ন ডলারের অত্যাধুনিক অস্ত্র-গোলাবারুদ বিক্রির কথা যুক্তরাষ্ট্রের।
তবে ইয়েমেন ও লিবিয়া যুদ্ধে জড়িত আমিরাতের কাছে বিপুল পরিমাণ এই সমরাস্ত্র পৌঁছালে তা বেসামরিক মানুষদের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে তুলবে দাবি করে এর প্রতিবাদ জানায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো। চুক্তি বাতিলের দাবি জানান কয়েকজন সিনেটরও। তবে চলতি সপ্তাহেই সিনেটের ভোটিভুটিতে হেরে গেছে আমিরাতের কাছে অস্ত্র বিক্রি বাতিলের সেই প্রচেষ্টা।
গত বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের লোভনীয় প্রস্তাবে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে রাজি হয় মরক্কো। ট্রাম্পের কাছ থেকে টেলিফোনে প্রস্তাব পাওয়ার পরপরই তাতে রাজি হয়ে যান মরক্কোর বাদশাহ ৬ষ্ঠ মোহাম্মদ।
চুক্তি অনুসারে, বিরোধপূর্ণ পশ্চিম সাহারা অঞ্চলের ওপর মরক্কোর সার্বভৌমত্বের দাবির স্বীকৃতি দেবে যুক্তরাষ্ট্র। ওই অঞ্চলে স্বাধীনতাকামীদের সঙ্গে কয়েক দশক ধরে বিরোধ চলছে মরক্কোর। মরোক্কান প্রভাব থেকে বেরিয়ে সেখানে আলাদা রাষ্ট্র গড়ার চেষ্টা করছে আলজেরিয়া সমর্থিত পলিসিও ফ্রন্ট।
আরব বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসেবে এবার ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করছে মরক্কো। এর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও সুদান ফিলিস্তিনিদের দাবি পূরণ হওয়ার আগেই ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছে।
ফিলিস্তিনিরা মরক্কোর ওই চুক্তিরও তীব্র বিরোধিতা করেছে। তারা বলছে, আরব দেশগুলো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গড়ার বহুদিনের দাবি পূরণ হওয়ার আগে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি না দেয়ার অবস্থান থেকে সরে গেছে।
সূত্র: আল জাজিরা
কেএএ/এমএস