পুরো লকডাউন নয়, বিধিনিষেধ বাড়াল ইরান
করোনাভাইরাস সংক্রমণের নতুন ঢেউ শুরু হওয়ায় দেশজুড়ে আবারও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ইরান। তবে আগের মতো আর পূর্ণ লকডাউন দেয়ার পথে হাঁটছে না মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি।
শনিবার করোনা সংক্রমণের হার হিসাবে রং-ভিত্তিক শহর ও কাউন্টির তালিকা হালনাগাদ করেছেন ইরানি কর্মকর্তারা। এতে সাদা রঙের অর্থ ওই এলাকায় করোনা সংক্রমণের ভয় নেই, আর লাল রং দিয়ে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল চিহ্নিত করা হয়েছে।
লাল এলাকাগুলো অন্তত দুই সপ্তাহ আংশিক লকডাউন থাকবে। অর্থাৎ, সেখানে অনাবশ্যক সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হবে। তবে এক-তৃতীয়াংশ সরকারি কর্মকর্তারা অফিস করতে পারবেন।
জরুরি সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি প্রতষ্ঠানগুলোও কার্যক্রম চালু রাখতে পারবে। ইরানের ৩২টি প্রাদেশিক রাজধানীর মধ্যে ২৫টিতেই এধরনের উচ্চসতর্কতা জারি করা হয়েছে।
তবে অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলগুলোতে বিভিন্ন খাতের আরও বেশি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান চালু রাখা যাবে।
স্থানীয় সময় রাত ৯টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত দেশজুড়ে কারফিউ জারি করেছে ইরানি প্রশাসন। পাশাপাশি, এক শহর থেকে অন্য শহরে ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
নিয়মভঙ্গকারীদের প্রতি ২৪ ঘণ্টায় ১০ মিলিয়ন রিয়াল করে জরিমানা করার অনুমতি দেয়া হয়েছে পুলিশকে।
এছাড়া, স্থানীয় লাইসেন্স প্লেট না থাকলে সেসব যানবাহনকে লাল ও কমলা চিহ্নিত এলাকাগুলোতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এসব এলাকার বাসিন্দারাও অন্য এলাকায় প্রবেশ করতে পারবেন না।
দেশটির সর্বত্র মাস্ক পরার নিয়ম কার্যকর রাখা হয়েছে।
সম্প্রতি ইরানে করোনা সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ শুরু হওয়ায় নতুন করে এসব কড়াকড়ি আরোপ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। দেশটিতে গত কয়েকদিনে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়েছে।
গত শনিবার ইরানে করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৪৩১ জন, নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন ১২ হাজার ৯৩১ জন। এ নিয়ে দেশটিতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ৩২৭টি, আক্রান্ত ৮ লাখ ৪১ হাজার ৩০৮ জন।
ইরানে করোনায় আক্রান্ত হয়ে একদিনে সর্বোচ্চ ৪৮২ জনের প্রাণহানির রেকর্ড হয়েছে গত ১৬ নভেম্বর। এর মাত্র তিনদিন আগে একদিনে সর্বোচ্চ ১৩ হাজার ৪২১ জন নতুন রোগী শনাক্তের রেকর্ড হয়েছে সেখানে।
অক্টোবরের শুরুর তুলনায় গত কয়েকদিনে ইরানে দৈনিক আক্রান্তের হার বেড়েছে অন্তত তিনগুণ।
সূত্র: আল জাজিরা
কেএএ/