ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

সুপ্রিম কোর্টেই কি মার্কিন নির্বাচনী সঙ্কটের সমাধান?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ০২:৫৮ পিএম, ০৫ নভেম্বর ২০২০

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী দৌড়ে ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থী জো বাইডেনের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছেন। কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হতে চাওয়া মার্কিন এই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হেরে যেতে রাজি নন। কয়েকটি রাজ্যে ডেমোক্র্যাট শিবিরের বিরুদ্ধে ভোট চুরির অভিযোগ এনে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন তিনি। তার এই হুমকির পর মার্কিন আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই নির্বাচনে সুপ্রিম কোর্ট চূড়ান্ত মীমাংসাকারী নাও হতে পারে।

তারা বলেছেন, নির্বাচনের দিন অথবা তার আগে প্রাপ্ত ব্যালটের গণনা বন্ধ করার জন্য ট্রাম্পের আবেদন অথবা নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতার গতিপথ বদলে দিতে সক্ষম মিশিগান এবং পেনসিলভানিয়ার মতো তীব্র উত্তেজনাপূর্ণ রাজ্যগুলোর বিরোধ আদালত নিষ্পত্তি করবেন; এটা সন্দেহজনক।

স্থানীয় সময় বুধবার সকাল পর্যন্ত অনেক রাজ্যে ভোট গণনা অব্যাহত রয়েছে। এর মাঝেই ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের ইস্ট রুমে হাজির হয়ে জাতির উদ্দেশে ভাষণে মিথ্যা জয়ের ঘোষণা দিয়েছেন। ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেন এখন পর্যন্ত ২৬৪ ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন, বিপরীতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঝুলিতে জমা পড়েছে ২১৪টি।

ফল ঘোষণা হয়নি নেভাদা (৬টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট), পেনসিলভানিয়া (২০টি), নর্থ ক্যারোলিনা (১৫টি), জর্জিয়ায় (১৬টি) এবং আলাস্কায় (৩টি)। এই পাঁচ রাজ্যের চারটিতে ট্রাম্প এগিয়ে থাকলেও নেভাদায় বাইডেনের জয়ের সম্ভাবনা প্রবল।

নির্বাচনী প্রচারণার সময় থেকেই মার্কিন এই প্রেসিডেন্ট ডাকযোগের ভোটের বিরুদ্ধে নিজের সুর চড়িয়েছেন। কোনও ধরনের প্রমাণ দেখাতে না পারলেও এতে জালিয়াতি হতে পারে বলে দাবি করেছেন তিনি; যা যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের ইতিহাসে বিরল।

ডাকযোগের ভোটের ব্যাপারে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, এটা মার্কিনিদের জন্য বিশাল জালিয়াতি। আমরা আইনের সঠিক ব্যবহার চাই। সুতরাং আমরা সুপ্রিম কোর্টে যাবো। আমরা সব ধরনের ভোটগ্রহণ বন্ধ চাই।

সুপ্রিম কোর্টে আইনি লড়াইয়ের ঘোষণা দিলেও নিজের দাবির পক্ষে প্রমাণ কিংবা বিস্তারিত তথ্য তিনি কখনই প্রকাশ করেননি। তার ঘোষণার পর পেনসিলভানিয়া রাজ্যে দেরিতে পৌঁছানো ডাকযোগের ভোট গণনা ঠেকাতে রিপাবলিকান শিবির সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ চেয়ে মামলা করেছে। পেনসিলভেনিয়া রিপাবলিকান শিবিরের এই মামলা এখনও ঝুলে রয়েছে।

মিশিগানে ভোট গণনা বন্ধসহ ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণা শিবির ও রিপাবলিকানরা অন্য কয়েকটি রাজ্যেও অভিযোগ দায়ের করেছে। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ কয়েকটি রাজ্যে আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ফল আসতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত মার্কিন নির্বাচন ভারসাম্যহীন অবস্থায় আছে।

এমন পরিস্থিতিতে দেশটির আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্দিষ্ট ব্যালট কিংবা ভোটদান এবং গণনার প্রক্রিয়ার বিষয়ে আপত্তি থাকতে পারে। তবে এ ধরনের বিরোধ চূড়ান্ত ফল নির্ধারণ করবে কিনা সেটি স্পষ্ট নয়।

ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির নির্বাচনী আইন বিশেষজ্ঞ নেড ফোলে বলেন, এবারের নির্বাচনে এমন কোনও উপাদান নেই, যা ২০০০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতার মতো পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। ওই বছর ডেমোক্র্যাট প্রার্থী আল গোরের প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান জর্জ বুশকে বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা দেন সুপ্রিম কোর্ট।

ফোলে বলেন, এ বিষয়ে এখনই কিছু বলাটা আগাম হয়ে যাবে। তবে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট কি ধরনের সিদ্ধান্ত নেবেন তা আপাতদৃষ্টিতে এবং এই মুহূর্তে ধারণা করা যাচ্ছে না।

তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই নির্বাচন আদালত পর্যন্ত গড়ালে উভয় পক্ষই তা মোকাবিলায় আইনজীবীদের প্রস্তুত করে রেখেছে। বাইডেন শিবির ইতোমধ্যে দেশটির আইনিসংস্থা পার্কিনস কোয়ের শীর্ষ নির্বাচনী অ্যাটর্নি মার্ক এলিয়াস, সাবেক সলিসাইটর জেনারেল ডোনাল্ড ভারিলি ও ওয়াল্টার ডেলিঞ্জারকে নিয়োগ দিয়েছে।

অন্যদিকে, ট্রাম্পের আইনজীবী দলে রয়েছেন তার নির্বাচনী প্রচারণা শিবিরের সাধারণ পরামর্শক পরিষদের সভাপতি ম্যাট মর্গান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী উইলিয়াম কনসোভয় ও প্রচারণা শিবিরের জ্যেষ্ঠ পরামর্শক জাস্টিন ক্লার্ক।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনে জালিয়াতির চেষ্টার যে অভিযোগ করেছেন; সেটি আদালতে তোলার যৌক্তিকতা আছে বলে মন্তব্য করেছেন ট্রাম্পের অ্যাটর্নি জেনা এলিস। ফক্স নিউজকে দেয়া এক স্বাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, আমাদের যদি এই আইনি চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হয়, তাহলে সেটি নজিরবিহীন কোনও ঘটনা নয়।

ফক্স বিজনেস নেটওয়ার্ককে এলিস বলেন, তিনি এটা নিশ্চিত করতে চান যে, নির্বাচন চুরি হয়নি।

এসআইএস/এমকেএইচ