এ বছরই অনুমোদন পেতে পারে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারণে বিশ্বজুড়েই এক ভয়াবহ সংকট তৈরি হয়েছে। এখন পর্যন্ত বিশ্বের দুই শতাধিক দেশে করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে বেশ কিছু দেশ করোনার হানায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
এখনও পর্যন্ত এই ভাইরাসের নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ বা ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হয়নি। করোনা থেকে বাঁচতে একমাত্র ভরসা এখন ভ্যাকসিন। তাই মানবজাতিকে এই ভাইরাস থেকে বাঁচাতে ভ্যাকসিন উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন গবেষক ও বিজ্ঞানীরা।
বিশ্বের অনেক দেশেই করোনার ভ্যাকসিন তৈরির কাজ চলছে। বেশ কিছু ভ্যাকসিন ইতোমধ্যেই মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়েছে। যে কয়টি ভ্যাকসিনের কাজ এখন পর্যন্ত এগিয়ে আছে তার মধ্যে অন্যতম অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী এবং ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি অ্যাস্ট্রেজেনেকার যৌথ উদ্যোগে এই ভ্যাকসিন তৈরি হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ বছরের শেষের দিকেই হয়তো অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেবে দেশটির স্বাস্থ্য দফতর।
ব্রিটিশ সরকারের বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে দ্য টাইমস। এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের মধ্যেই সম্ভবত এসে যাবে করোনার এই সম্ভাব্য ভ্যাকসিন। ৬ মাস অথবা তারও আগে ভ্যাকসিন চলে আসতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছে একটি সূত্র।
বর্তমানে এই ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল চলছে। যুক্তরাজ্যের ভ্যাকসিন সংক্রান্ত জয়েন্ট কমিটি একটি বিশেষ প্রটোকলের উন্নয়ন করেছে। এতে বলা হয়েছে, যে কোনো অনুমোদিত ভ্যাকসিন প্রথমেই ৬৫ বছরের বেশী বয়সীদের দেওয়া হবে। এছাড়া যাদের অন্য কোনও রোগ রয়েছে বা উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছেন তাদের দেওয়া হবে। তারপর থাকবেন পঞ্চাশোর্ধরা। সবার শেষে তরুণ-তরুণীদের দেওয়া হবে এই ভ্যাকসিন।
ব্রিটেন সরকারের পক্ষ থেকে ১০০ মিলিয়ন ডোজ করোনা ভ্যাকসিন তৈরির অর্ডার দেওয়া হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে এর সাফল্য প্রমাণিত হওয়ার আগেই হয়তো ভ্যাকসিন তৈরির কাজ শুরু হয়ে যাবে। কারণ বিজ্ঞানীরা এ বিষয়ে নিশ্চিত যে, অন্তত ৫০ শতাংশ সংক্রমণ কমাতে সক্ষম হবে এই ভ্যাকসিন।
যদি এই ভ্যাকসিনের অনুমোদন পাওয়া যায় তবে ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা (এনএইচএস) গণহারে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগের জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দেবে। ইমপেরিয়াল কলেজ অব লন্ডনের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক নিলয় শাহ জানিয়েছেন, ভ্যাকসিন অনুমোদিত হলেও প্রথমেই হয়তো সবাইকে ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে না। এর জন্য ৬ মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে।
কিছুদিন আগেই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের ট্রায়াল। পরে অবশ্য স্বস্তির খবর দেয় অক্সফোর্ড। পরবর্তীতে আবারও শুরু হয় ট্রায়াল প্রক্রিয়া।
টিটিএন/পিআর