লাদাখে তীব্র উত্তেজনা, ট্যাঙ্ক-সাঁজোয়া যান মোতায়েন ভারতের
বিতর্কিত লাদাখ সীমান্তে পারমাণবিক অস্ত্রধারী চিরবৈরী দুই প্রতিবেশীর সামরিক বাহিনীর মাঝে কয়েক মাস ধরে নজিরবিহীন উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। কূটনৈতিক, সামরিক ও সরকারি পর্যায়ে লাদাখের উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে উভয় দেশ দফায় দফায় আলোচনায় সীমান্ত থেকে সৈন্য সরিয়ে নিতে রাজি হলেও অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি। বরং উভয় দেশের সৈন্যরা বিতকির্ত এই সীমান্তে ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়া যান নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনী রোববার লাদাখে ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া যান মোতায়েনের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, সেনাবাহিনীর ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া যান পূর্ব লাদাখ সীমান্তে চীনা সৈন্যদের লক্ষ্য করে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। চলতি বছরের এপ্রিল-মে থেকে ব্যাপক বিতর্কিত এই সীমান্ত নিয়ে প্রতিবেশী দুই দেশের মাঝে নজিরবিহীন উত্তেজনা দেখা দেয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, ভূপৃষ্ঠ থেকে বিশ্বের সর্বোচ্চ উচ্চতার সীমান্ত লাদাখের চুমার-দেমচক এলাকায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর সারি সারি টি-৯০ ট্যাঙ্ক ও বিএমপি সাঁজোয়া যান চীনা ভূখণ্ডের দিকে তাক করে আছে।
সর্বশেষ গত ৩১ আগস্ট দুই দেশের সেনাবাহিনীর সদস্যদের মাঝে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। ওই দিন লাদাখের প্যাংগং লেকের দক্ষিণ তীরে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশের চেষ্টা করে চীনা সৈন্যরা। তখন থেকেই উভয় দেশ সীমান্তে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে কয়েক দফা বৈঠক করে। কিন্তু এতে কোনও কাজ হয়নি।
#WATCH Indian Army deploys T-90 & T-72 tanks along with BMP-2 Infantry Combat Vehicles that can operate at temperatures up to minus 40 degree Celsius, near Line of Actual Control in Chumar-Demchok area in Eastern Ladakh.
— ANI (@ANI) September 27, 2020
Note: All visuals cleared by competent authority on ground pic.twitter.com/RiRBv4sMud
গত ২৯ ও ৩০ আগস্ট রাতে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি তাদের ট্যাঙ্ক এবং সৈন্য সীমান্তে সরিয়ে নেয়। যদিও দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী- রাতের বেলা সীমান্তে যে কোনও ধরনের সৈন্য সমাবেশ এবং সামরিক যান চলাচল নিষিদ্ধ। পরদিন প্যাংগং লেকের একই এলাকায় আরও সৈন্য সমাবেশ ঘটায় চীন। এ নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দুই দেশের সামরিক বাহিনীর কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সীমান্তের পুরো এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করতে সৈন্যরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। দেশটির সেনাবাহিনীর ১৪ পদাতিক ডিভিশনের চিফ অব স্টাফ মেজর জেনারেল অরবিন্দ কাপুর বলেছেন, ভারতীয় সামরিক বাহিনীর একমাত্র কাঠামো হলো ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি। এ ধরনের বরফাচ্ছাদিত ভূখণ্ডে ট্যাঙ্ক, যুদ্ধযান এবং বন্দুক রক্ষণাবেক্ষণ করা এক ধরনের চ্যালেঞ্জ।
বিএমপি সাঁজোয়া যান মাইনাস ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়ও স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে। লাদাখে দিনের বেলা তাপমাত্রা প্রায়ই মাইনাস ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে থাকে। তবে রাতে সেটি আরও বাড়ে।
সূত্র: এএনআই, এনডিটিভি।
এসআইএস/পিআর