করোনায় নিউজিল্যান্ডের অর্থনীতিতে ধস
করোনাভাইরাসের কারণে নিউজিল্যান্ডের অর্থনীতিতে ধস নেমে এসেছে। দেশটিতে গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ মন্দা দেখা দিয়েছে। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে দেশজুড়ে কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপের কারণেই দেশটিকে এমন বিপর্যয় দেখতে হচ্ছে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লকডাউন জারি এবং সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার কারণে গত এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে দেশটির জিডিপি ১২ দশমিক ২ শতাংশ কমে গেছে।
১৯৮৭ সালের পর এই প্রথম দেশটি এমন মন্দার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তবে নিউজিল্যান্ড সরকার আশা প্রকাশ করেছে যে, তারা খুব দ্রুত এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে।
দেশটির পরবর্তী নির্বাচনে অর্থনীতি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে দাঁড়াতে পারে। গত আগস্টেই এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সরকারি এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, গত ১৯ মার্চ থেকে দেশজুড়ে কড়াকড়ি আরোপের কারণে অর্থনীতির বেশ কিছু সেক্টরে এর বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, রেস্টুরেন্ট এবং পরিবহনে বেশ ক্ষতি হয়েছে। আন্তর্জাতিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এবং দেশজুড়ে কঠোর লকডাউন জারির কারণে এসব ক্ষেত্রে সরাসরি প্রভাব পড়েছে।
এদিকে, সরকারের কঠোর লকডাউনের বিরোধিতা করে কিছুদিন আগেই বিক্ষোভ করেছে অকল্যান্ড শহরের হাজার হাজার মানুষ।
গত মাসে অকল্যান্ডে নতুন করে সামাজিক দূরত্ব জারি করে সরকার। হঠাৎ করেই ওই শহরে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় প্রশাসন নতুন করে আবারও কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করতে বাধ্য হয়েছে।
গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশে প্রথম করোনার উপস্থিতি ধরা পড়ে। এরপরেই কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করে নিউজিল্যান্ড। ফলে সেখানে সংক্রমণ অনেক ধীর গতিতে ছড়িয়েছে। দেশটিতে সংক্রমণ এবং মৃত্যুহারও অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম।
করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে প্রথম থেকেই সব দেশের কাছে আদর্শ হয়ে উঠেছিল নিউজিল্যান্ড। প্রায় একশ দুই দিন দেশটিতে নতুন করে কোনো সংক্রমণ ধরা পড়েনি। কিন্তু এরপরেই দেশটিতে নতুন করে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে।
ওয়ার্ল্ডোমিটারের পরিসংখ্যান বলছে, নিউজিল্যান্ডে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ৮০৯। এর মধ্যে মারা গেছে ২৫ জন। এছাড়া ইতোমধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছে ১ হাজার ৭০৭ জন। দেশটিতে বর্তমানে করোনার অ্যাক্টিভ কেস ৭৭টি এবং আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে চারজন।
টিটিএন