মরিচা পড়ছে চাঁদে
চাঁদের গায়ে মরিচা পড়ার প্রমাণ মিলেছে। সম্প্রতি ভারতের চন্দ্রযান থেকে এমন ছবি পাওয়া গেছে বলে রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং।
মন্ত্রী জানান, ইসরোর প্রথম চন্দ্র অভিযান থেকে যে ছবি এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, চাঁদের মেরুর দিকে মরিচা পড়ছে। চাঁদের ভূমিতে লোহার মত শক্ত পাথরের উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে, যা থেকে অক্সিজেন ও পানির উপস্থিতির প্রমাণ মেলে। কারণ এগুলো লোহার সংর্স্পশে এলেও মরচে পড়তে দেখা যায়।
নাসা জানিয়েছে, এর থেকে প্রমাণ হয় যে চাঁদের মেরুতে পানি আছে। বিজ্ঞানীরা এই বিষয়ে গবেষণা করছেন।
দশ বছর আগে ভারতের পাঠানো মহাকাশযান চন্দ্রায়ন ১-এর তোলা ছবি থেকেই এরকম তথ্য পাওয়া যায়, যা পরে জানান নাসার বিজ্ঞানীরা। সেই তথ্য থেকে জানা যায়, চাঁদের পৃষ্ঠে বেশ কিছুটা এলাকাজুড়ে রয়েছে সেই বরফ, যা থেকে আগামী দিনে পানির তৈরি হওয়ার আশাও রয়েছে।
সেই পানির উপস্থিতিতে হয়তো একদিন চাঁদকেও বাসযোগ্য করার পরিকল্পনা নেয়া হবে। এই বরফের রেশ ধরে চাঁদের পৃষ্ঠদেশের তলায় যদি কোনোভাবে পানির সন্ধান মেলে, তাহলে মানুষের পক্ষে চন্দ্র অভিযান সহজ হবে।
নাসার গবেষণা বলছে, বহুকাল আগে থেকেই চাঁদের অন্ধকার অংশে ওই বরফ রয়েছে। আর সেই তথ্য প্রথম এনে দিয়েছিল ভারত। চাঁদের দক্ষিণ অংশে যে বরফ রয়েছে সেটা একই জায়গায় পুঞ্জীভূত হয়ে আছে। আর উত্তর অংশে থাকা বরফ অনেকটা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
চাঁদের ওই অন্ধকার অংশে তাপমাত্রা কখনই মাইনাস ১৫৬ ডিগ্রির উপরে ওঠে না। ওই অঞ্চলে সূর্যের আলো কখনই স্পর্শ করতে পারে না। এর আগেও বরফের উপস্থিতির ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল, তবে এবার বিষয়টা আরও স্পষ্ট হলো।
২০০৮ সালে চাঁদের উদ্দেশ্যে রওনা হয় ভারতের প্রথম চন্দ্রযান ‘চন্দ্রায়ন ১’। তবে ভারতের এই স্পেসক্রাফট দীর্ঘদিন ধরেই নানা ধরনের যান্ত্রিক সমস্যায় ভুগছে। ২০০৯ সালের ২৮ আগস্টের পর থেকে ওই মহাকাশযানের রেডিও সিগন্যাল আসাও বন্ধ হয়ে গেছে।
কিছুদিন আগে নাসার বিশেষ রাডারে চন্দ্রায়ন-১-এর সেই ছবি ধরা পড়ে। আর সেই মহাকাশযান এখন নিশ্চিন্তে চাঁদের চারপাশে ঘুরে-বেড়াচ্ছে বলে জানিয়েছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। ২০০৮ সালের ২২ অক্টোবর এটি মহাকাশে পাঠানো হয়। জানা গেছে, এটি এখনও চাঁদের ২০০ কিলোমিটার দূর দিয়ে ঘুরছে।
এমএসএইচ