মানবকল্যাণে পুতিনের কাছে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন চান দুতার্তে
রাশিয়ার করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন তৈরির প্রচেষ্টার ভূয়সী প্রশংসা করে ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তের বলেছেন, তিনি ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে ব্যক্তিগতভাবে আগ্রহ নিতে ইচ্ছুক। একই সঙ্গে ফিলিপাইনে করোনা ভ্যাকসিন দেয়ার রাশিয়ার প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি। তবে তিনি রাশিয়ার কাছ থেকে এই ভ্যাকসিন বিনামূল্যে পাবেন বলে প্রত্যাশা করেছেন।
মঙ্গলবার বিশ্বে করোনাভাইরাসের প্রথম ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিয়েছে রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, মস্কোর গামালিয়া ইনস্টিটিউটের তৈরি করোনার এই ভ্যাকসিন মঙ্গলবার রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সবুজ সংকেত পেয়েছে। ইতোমধ্যে তার মেয়ে এই ভ্যাকসিন নিয়েছেন। এই ভ্যাকসিনের গণহারে উৎপাদন শিগগিরই শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
গামালিয়া ইনস্টিটিউট ও দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে তৈরি করোনাভাইরাসের এই ভ্যাকসিন ফিলিপাইনে সরবরাহ করার প্রস্তাব দিয়েছে রাশিয়া। মস্কো বলছে, ফিলিপাইন চাইলে ভ্যাকসিনটির সহযোগী হিসেবে উৎপাদনও করতে পারবে।
মস্কোর এই প্রস্তাবের পর ফিলিপাইন বলছে, তারা ভ্যাকসিনটির পরীক্ষা, সরবরাহ এবং উৎপাদন কাজের সঙ্গে যুক্ত হতে প্রস্তুত আছে। এশিয়ার যে কয়েকটি দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি ফিলিপাইন তার মধ্যে অন্যতম। দেশটিতে মঙ্গলবার পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৩৯ হাজার ৫৩৮ জন।
ফিলিপিনো প্রেসিডেন্ট দুতার্তে বলেছেন, আমি প্রেসিডেন্ট পুতিনকে বলবো- করোনাভাইরাসের লড়াইয়ে আপনাদের গবেষণায় আমার অগাধ বিশ্বাস আছে। আমি বিশ্বাস করি- আপনারা আসলেই মানবতার কল্যাণের জন্য ভ্যাকসিনটি তৈরি করেছেন।
বিশ্বে প্রথম হিসেবে রাশিয়ার অনুমোদিত করোনাভাইরাসের এই ভ্যাকসিনের সুরক্ষা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। তবে মানবদেহে পরীক্ষার মাত্র দুই মাসের মধ্যে ভ্যাকসিনটি চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ায় অনেকেই রাশিয়ার বৈজ্ঞানিক সক্ষমতারও প্রশংসা করেছেন। দ্রুত ভ্যাকসিন আনলেও এখন এর কার্যকারিতা আদৌ টিকে থাকবে কিনা সেটিই এখন রাশিয়ার জন্য বড় চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির প্রচেষ্টা চলমান রয়েছে। বিশ্বজুড়ে নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষরা কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন তৈরির প্রতিযোগিতায় সুরক্ষার বিষয়ে কোনও ধরনের আপোষ করা হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ ধরনের ভ্যাকসিন উৎপাদনের পেছনে সরকারের প্রতি জনগণের ক্রমবর্ধমান অবিশ্বাস এবং আস্থাহীনতা কাজ করছে বলে সম্প্রতি কিছু জরিপে দেখা গেছে।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত তা বিশ্বের দুই শতাধিক দেশে ছড়িয়েছে। এতে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা দুই কোটি ছাড়িয়ে গেছে এবং মারা গেছেন ৭ লাখ ৩৯ হাজারের বেশি মানুষ।
বিশ্বজুড়ে করোনার তাণ্ডব চললেও এখন পর্যন্ত রাশিয়া ছাড়া অন্য কোনও দেশ এর ভ্যাকসিন কিংবা প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে পারেনি। তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীদের তৈরি অন্তত দুই শতাধিক ভ্যাকসিন পরীক্ষার বিভিন্ন ধাপে রয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ২৪টি মানবদেহে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পর্যায়ে পৌঁঁছেছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, অন্তত চারটি ভ্যাকসিন মানবদেহে তৃতীয় ধাপের পরীক্ষায় রয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স।
এসআইএস/এমকেএইচ
সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক
- ১ ফেসবুক ব্যবহারকারীদের সংবেদনশীল তথ্য সংগ্রহ, মেটাকে জরিমানা
- ২ মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: এক নজরে দুই প্রার্থী
- ৩ যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে বৃষ্টির বাগড়া, কমতে পারে ভোটার উপস্থিতি
- ৪ হাসিনার আমলে গুম ২০০ লোকের খোঁজ মেলেনি: তদন্ত কমিশন
- ৫ মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফলে বাংলাদেশে কী প্রভাব পড়বে?