৫০টা খুনের কথা স্বীকার করলেন আসামি
ছিলেন চিকিৎসক। ব্যবসা করতে নেমে ধোকা খেয়ে জড়িয়ে পড়নে অপরাধ জগতে। হয়ে ওঠেন সিরিয়াল কিলার। একে একে খুন করেন ৫০ জনকে। পুলিশের অবশ্য ধারণা তিনি খুন করেছেন আরও বেশি, ১০০টা হবে। খুনের পর প্রমাণ নষ্ট করতেও তিনি বেছে নেন অভিনব এক পদ্ধতি। লাশগুলো তিনি ফেলে দিতেন এমন একটি খালে যেখানে প্রচুর কুমিরের বাস। এরপর সেই কুমিরগুলোই খেয়ে ফেলত লাশ। বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ভারতের ভয়াবহ এই সিরিয়াল কিলারের গল্প।
এই সিরিয়াল কিলারের নাম দেভেন্দার শর্মা। মঙ্গলবার রাতে দিল্লির উপকণ্ঠে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। দেভেন্দার পুলিশকে বলেছেন, ৫০টা খুনের পর তিনি আর হিসাব রাখেননি। খুন ছাড়াও কিডনি পাচার এবং আরও নানা জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি।
বেশ কয়েকটি খুন আর অপহরণ আর একশোরও বেশি কিডনি পাচারের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে রাজস্থানে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছিলেন দেভিন্দার শর্মা। ১৬ বছর কারাবাসের পরে জানুয়ারি মাসে তাকে ২০ দিনের জন্য প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল এবং তারপরই তিনি নিরুদ্দেশ হয়ে যান। তবে পুলিশের হাতে আবারও ধরা পড়েছেন তিনি।
চিকিৎসক থেকে যেভাবে খুনি
বিহার থেকে ডাক্তারি পাস করে তিনি রাজস্থান চলে যান আশির দশকের মাঝামাঝি। নব্বইয়ের দশকের গোড়ায় তিনি একটা রান্নার গ্যাসের এজেন্সি নিতে চেষ্টা করেন। এর জন্য তার ১১ লাখ টাকা খরচ হয়ে গেলেও তিনি ধোকা খান। নেমে আসে আর্থিক অনটন।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, তারপরেই ধীরে ধীরে তার অপরাধ জীবনের শুরু। তিনি জাল গ্যাস এজেন্সি খোলেন উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে। আবার ওদিকে রাজস্থানে কিডনি পাচার চক্রের সঙ্গেও যুক্ত হয়ে পড়েন। ১২৫টি কিডনি তিনি পাচার করেছেন, যার প্রতিটার জন্য ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা পেতেন। ২০০১ সালে জালিয়াতির জন্য ধরাও পড়েন উত্তরপ্রদেশে। এরপরেই তিনি একের পর এক খুন করতে শুরু করেন।
তিনি এবং সঙ্গীসাথীরা একটি গাড়ি ভাড়া করতেন উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে যাওয়ার জন্য। চালককে একটা নির্জন জায়গায় গিয়ে খুন করে কাশগঞ্জের হাজারা খালে ফেলে দেওয়া হতো বলে পুলিশ জেরা থেকে জেনেছে।
ওই খালটিতে প্রচুর কুমির রয়েছে। মৃতদেহ সেগুলোই খেয়ে ফেলত। তাই দেহ আর খুঁজে পাওয়া যেত না। একইভাবে রান্নার গ্যাস ভর্তি ট্রাকও ছিনতাই করে চালককে হত্যা করে মৃতদেহ ফেলে দেওয়া হত ওই খালে। সূত্র : বিবিসি বাংলা।
এনএফ/এমএস