ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

৬০ হাজার মানুষকে দেয়া হচ্ছে মডার্না এবং ফাইজারের ভ্যাকসিন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ০২:২৭ পিএম, ২৮ জুলাই ২০২০

যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা সাবানাহ। সোমবার সকাল পৌনে সাতটার দিকে করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য একটি ভ্যাকসিনের প্রথম শট তিনি নিয়েছেন। মানবদেহে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য একেবারে শেষ ধাপে বৃহৎ পরিসরে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করেছে মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি মডার্না। ৩০ হাজার মানুষের দেহে এই ভ্যাকসিনটির প্রয়োগ শুরু হয়েছে; সাবানাহ সেই ৩০ হাজার জনের মধ্যে ভ্যাকসিন নেয়ায় প্রথম।

বহুল প্রতীক্ষিত এই ভ্যাকসিন পরীক্ষা কার্যক্রমকে একটি মাইলফল হিসেবে দেখা হচ্ছে। শেষ ধাপের এই পরীক্ষায় ৩০ হাজার জনের অর্ধেক স্বেচ্ছাসেবীকে ভ্যাকসিনটি দেয়া হবে; বাকিরা পাবেন প্ল্যাসেবো। এদিকে, মার্কিন আরেক ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট কোম্পানি ফাইজার বলছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অন্তত ১২০টি স্থানে তাদের তৈরি করোনা ভ্যাকসিনের শেষ ধাপের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়েছে। মার্কিন এই কোম্পানিও বিশ্বে ৩০ হাজার স্বেচ্ছাসেবীর দেহে ভ্যাকসিনটি প্রয়োগ করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজের পরিচালক অ্যান্থনি ফাউসি সম্মেলনে বলেছেন, ভ্যাকসিনোলজির ইতিহাসে আজ আমরা সত্যিকারের এক ঐতিহাসিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছি।

তিনি বলেন, একেবারে মৌলিক বিজ্ঞান থেকে বৃহৎ পরিসরের তৃতীয় ধাপে সুরক্ষা ও কার্যকারিতার পরীক্ষায় পৌঁছানো এবং ভ্যাকসিন তৈরিতে যুক্তরাষ্ট্র কখনই তড়িঘড়ি করেনি। আগামী নভেম্বর অথবা ডিসেম্বরের মধ্যে করোনা ভ্যাকসিন কার্যকর হবে কিনা সেব্যাপারে মডার্নার গবেষকরা বলতে পারবেন বলে ধারণা দিয়েছেন ফাউসি। তিনি বলেছেন, এটি এক ধরনের সম্ভাবনা। তবে শিগগিরই এ ব্যাপারে জানা যাবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেন তিনি।

অন্যদিকে, ফাইজারের কর্মকর্তারা বলেছেন, আগামী অক্টোবরের মধ্যেই মানবদেহে ভ্যাকসিন প্রয়োগের জন্য কর্তৃপক্ষের অনুমোদন চাইতে সক্ষম হবে বলে প্রত্যাশা করছে কোম্পানিটি।

ভ্যাকসিন তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এ দুই কোম্পানি ও যুক্তরাষ্ট্র সরকার বলছে, নজিরবিহীন গতিতে ভ্যাকসিন তৈরির প্রচেষ্টা এগিয়ে নেয়া হলেও এর সুরক্ষার ব্যাপারে কোনও ধরনের ছাড় দেয়া হয়নি। ফাউসি বলেন, ভ্যাকসিনের সুরক্ষা অথবা বৈজ্ঞানিক মানদণ্ডের ক্ষেত্রে কোনও আপস করা হবে না।

মার্কিন এই ভ্যাকসিন কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে দুই ডোজ প্রয়োগ করা হবে। পরে ভ্যাকসিন পরীক্ষায় অংশ নেয়া স্বেচ্ছাসেবীরা নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কিংবা অসুস্থ হয়ে যান কিনা তা যাচাই করে দেখবেন গবেষকরা।

তৃতীয় ধাপের এই পরীক্ষায় ভ্যাকসিন সফল হলে বছরে ৫০০ মিলিয়ন ডোজ উৎপাদনের পরিকল্পনা করছে মডার্না। ২০২১ সালের মধ্যে মার্কিন এই কোম্পানি ১ বিলিয়ন ডোজ উৎপাদন করবে বলে জানিয়েছে। বৃহৎ পরিসরে পরীক্ষা কার্যক্রমে সহায়তা করতে মার্কিন সরকার মডার্নাকে আরও ৪৭২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমোদন দিয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই দুটি ভ্যাকসিন ছাড়াও শেষ ধাপের পরীক্ষায় পৌঁছেছে চীনের দু’টি এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ভ্যাকসিন। করোনাভাইরাস মহামারির অবসানের লক্ষ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শতাধিক ভ্যাকিসিন তৈরির প্রকল্প চলমান রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনও ভ্যাকসিনই চূড়ান্ত ধাপের পরীক্ষা শেষ করতে পারেনি।

চলতি বছরের শেষের দিকে করোনার যেকোনও কার্যকর ভ্যাকসিন চলে আসতে পারে বলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা প্রত্যাশা করেছেন। গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে করোনার প্রথম উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পর বর্তমানে তা বিশ্বের দুই শতাধিক দেশে ছড়িয়েছে। এতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দেড় কোটি ছাড়িয়েছে এবং প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৬ লাখ ৫৬ হাজারের বেশি।

সূত্র: ওয়াশিংটন পোস্ট।

এসআইএস/পিআর