চূড়ান্ত ধাপে ৩০ হাজার মানুষের দেহে মডার্নার ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু
মার্কিন কোম্পানি মডার্নার তৈরি কোভিড-১৯ এর সম্ভাব্য ভ্যাকসিনটি চূড়ান্ত ধাপে ৩০ হাজার মানুষের দেহে প্রয়োগ শুরু হয়েছে। এর আগে করোনার সম্ভাব্য কোনো ভ্যাকসিন এত মানুষের দেহে পুশ হয়নি। কোম্পানিটি সোমবার পরীক্ষা শুরুর ঘোষণা দিয়ে বলেছে, বছর শেষেই তাদের ভ্যাকসিন সবাই ব্যবহার করতে পারবে।
কোনো রোগের ভ্যাকসিন বা টিকা তৈরির ক্ষেত্রে সাধারণত অনেকগুলো ধাপ পার হতে হয়। চূড়ান্ত ধাপে হাজার হাজার মানুষের দেহে গণহারে ভ্যাকসিনটি প্রয়োগ মূলত দেখা হয় সবার ব্যবহারের জন্য তা কার্যকর ও নিরাপদ কিনা। সফল হলেই ভ্যাকসিনটি গণমানুষের জন্য ব্যবহারের অনুমোদন দেয় কর্তৃপক্ষ।
মডার্না ও যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের বিজ্ঞানীদের যৌথ প্রচেষ্টায় উদ্ভাবিত করোনার সম্ভাব্য ভ্যাকসিনটির পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে দেশটির ৮৯টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র। এর আগে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে মডার্নার ভ্যাকসিন করোনার বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করেছে বলে প্রমাণিত হয়।
অংশগ্রহণকারীদের অর্ধেককে ২৮ দিনের ব্যবধানে দুটি ডোজ দেওয়া হবে। বাকি অর্ধেককে দেওয়া হবে লবণপানির একটি মিশ্রণ। তবে স্বেচ্ছাসেবী বা তাদের ইনজেকশন দেওয়া স্বাস্থ্যকর্মীরা কেউই জানবেন না কার দেহে আসলে কোনটি পুশ করা হচ্ছে। ফলাফল স্বচ্ছ রাখতেই এমন নিয়ম।
ভ্যাকসিন প্রয়োগের পর বিজ্ঞানীরা নিয়মিত স্বেচ্ছাসেবীদের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করবেন। বিশেষ করে, যাদের দেহে ভ্যাকসিনটি দেওয়া হয়নি তারা করোনায় আক্রান্ত হন কি না—তা দেখতে চান বিজ্ঞানীরা। সেই তুলনায় ভ্যাকসিন গ্রহণকারীদের মাঝে এর হার কম দেখা দিলে, প্রতিষেধকটি সফল বলে প্রমাণিত হবে।
মডার্নার ভ্যাকসিনের সম্ভাব্য অগ্রগতির কথা আগে থেকেই শোনা যাচ্ছিল। প্রথম-দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষায় স্বেচ্ছাসেবীদের দেহে ভাইরাসটির বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরির প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়া তা নিরাপদ বলেও প্রমাণিত হয়েছে। চূড়ান্ত ধাপের এই বৃহৎ পরীক্ষা আগামী অক্টোবরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
বৃহৎ পরিসরে এই ট্রায়াল শুরুর বিষয়টি নিয়ে মার্কিন স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, ‘ট্রায়ালটি হতে হবে সব বয়সের, সব জাতির অর্থাৎ সব ধরনের মানুষের ওপর। আমরা চাই এর ফলাফল যেনো যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যার যে বৈচিত্র তার প্রতিনিধিত্ব করে। এর মাধ্যমেই দেখা হবে ভ্যাকসিনটি সবার জন্য কার্যকর ও নিরাপদ কিনা।’
এসএ