ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

করোনা : উইঘুর অধ্যুষিত জিনজিয়াংয়ে ‘যুদ্ধকালীন তৎপরতা’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৭:২৯ পিএম, ১৯ জুলাই ২০২০

চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সংখ্যালঘু উইঘুর অধ্যুষিত জিনজিয়াং প্রদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় তা নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানে ‘যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি’ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

জিনজিয়াং কর্তৃপক্ষ রোববার সকালের দিকে বলেছে, এই প্রদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১৭ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। এছাড়া অ্যাসিম্পটোমেটিক হিসেবে আরও ২৩ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে প্রদেশটিতে মোট ২৬৯ জনকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

গত সপ্তাহে জিনজিয়াংয়ের উরুমকি শহরে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পায়। পরে কর্তৃপক্ষ প্রাদেশিক এই রাজধানীকে লকডাউন ঘোষণা করেছে। করোনা সংক্রমণের বিস্তার ঠেকাতে দ্রুত রাজ্যের সঙ্গে সব ধরনের বিমান, স্থল ও রেল সার্ভিস বন্ধ করা হয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জিনজিয়াং প্রদেশ সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত জিনজিয়াংয়ে জনসমাগম নিষিদ্ধ থাকবে।

উরুমকি পৌর স্বাস্থ্য কমিশনের পরিচালক ঝ্যাং ওয়েই এক বিবৃতিতে বলেছেন, জিনজিয়াংয়ে যুদ্ধকালীন তৎপরতা শুরু করেছে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। উরুমকিজুড়ে ২০০ মেডিক্যাল কর্মী ব্যাপকহারে করোনা পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।

জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ ও মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, চীন সরকার কমপক্ষে ১০ লাখ উইঘুর মুসলিমকে জিনজিয়াংয়ের আশ্রয় কেন্দ্রে আটকে রেখেছে। চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় এই প্রদেশে অন্তত এক কোটি সংখ্যালঘু উইঘুরের বসবাস। এর মধ্যে প্রায় ৪৫ শতাংশ তুর্ক মুসলিম। সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় নিপীড়ন এবং বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন এই মুসলিমরা।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ চীন সরকারের বিরুদ্ধে জিনজিয়াংয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনে পদ্ধতিগত অভিযান পরিচালনার অভিযোগ করেছে। একই সঙ্গে উইঘুরদের বিরুদ্ধে চীনের নিপীড়ন বিভিন্ন সময়ে বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

মহামারি আকারে করোনা ছড়িয়ে পড়ার পর চীন সরকার করোনা বিষয়ে হুবেইসহ অন্যান্য প্রদেশে তৎপরতা শুরু করলেও জিনজিয়াংয়ে প্রদেশের সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায় উইঘুরদের বিষয়ে তেমন গুরুত্ব দেয়নি বলে অভিযোগ আছে

গত ফেব্রুয়ারিতে উইঘুর সম্প্রদায়ভুক্ত ফরাসি সমাজবিজ্ঞানী দিলনুর রেইহান বলেন, ‘উইঘুর সম্প্রদায়ের সদস্যরা কঠিন বিপদের সম্মুখীন। করোনাভাইরাস প্রাদুভার্বের মধ্যেই আমাদের পরিবারের সদস্যরা বন্দি শিবিরে বসবাস করছেন। আমরা জানি না তারা পর্যাপ্ত খাদ্য-পানি পাচ্ছে কি না বা তাদের যথেষ্ট মাস্ক আছে কি না।’

করোনাভাইরাসের ভয়াল থাবা যাতে উইঘুর সম্প্রদায়ের ওপর বিস্তার না করে সেখানে বন্দিশালাগুলো খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন ৩ হাজারের অধিক ব্যক্তি। চেঞ্জ.অর্গ নামের একটি পিটিশন ওয়েবসাইটে তারা এ দাবি জানান। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে ভাইরাসথ্রেটইনদ্যক্যাম্প, ডব্লিউএইচও২ইউরুমকি হ্যাশট্যাগ দিয়ে ক্যাম্পেইন করে জিনজিয়াংয়ে প্রতিনিধি পাঠানোর জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে আহ্বান জানান তারা।

গত বছরের ডিসেম্বরে উহানে করোনাভাইরাসের উৎপত্তি হওয়ার পর কঠোর লকডাউন এবং অন্যান্য বিধি-নিষেধের মাধ্যমে চীন মহামারি বহুলাংশে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। শনিবার চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন দেশটিতে মাত্র ২৫২ জন করোনা রোগী চিকিৎসাধীন আছেন বলে জানায়। মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে মারা গেছেন ৪ হাজার ৬৩৪ জন এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৮৩ হাজার ৬৬০ জন।

এসআইএস/এমকেএইচ