লাদাখ নিয়ে মোদির সমালোচনায় মুখ খুললেন মনমোহন
লাদাখ নিয়ে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মন্তব্য নিয়ে সমালোচনা করলেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। লাদাখ-কাণ্ডের পর সর্বদলীয় বৈঠকে মোদির মন্তব্য নিয়ে মনমোহন বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সব সময় ভেবেচিন্তে কথা বলা উচিত। শব্দের গুরুত্ব বুঝে কথা বলা উচিত প্রধানমন্ত্রীর।’
সাধারণত কোনো বিষয় নিয়ে মুখ খুলতে দেখা যায় না কংগ্রেসদলীয় দুই বারের এই প্রধানমন্ত্রীকে। দেশের খুব গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে অবশ্য তিনি মন্তব্য করেন। তারই অংশ হিসেবে সোমবার মনমোহন সিং বলেন, ‘দেশ ও জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে তার মন্তব্য ও ঘোষণার তাৎপর্য কী হতে পারে, তা বিবেচনায় থাকা দরকার।’
প্রধানমন্ত্রী পদে থেকে যথেষ্ট ভাবনা-চিন্তা না করে কথা বলার যে বিপদ রয়েছে, সে কথা নিজের উত্তরসূরিকে স্মরণ করালেন মনমোহন। তিনি যে কম কথা বলেন ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ছিল। কিন্তু সীমান্তের পরিস্থিতি সম্পর্কে মোদির বক্তব্য প্রসঙ্গে সেই তিনিই মুখ খুললেন।
লাদাখের গলওয়ান–কাণ্ডে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমালোচনায় এবার মুখর হলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। সর্বদলীয় বৈঠকে তাঁর মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে আজ সোমবার মনমোহন সিং এক বিবৃতিতে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সব সময় ভেবেচিন্তে কথা বলা উচিত।
লাদাখে সেনা হতাহতের ঘটনার পর সর্বদলীয় বৈঠকে মোদি বলেছিলেন, ‘ভারতীয় ভূখণ্ডে কেউ ঢোকেনি। কোনো ঘাঁটিও দখল হয়নি।’ তার এমন মন্তব্যের সঙ্গে সঙ্গেই প্রশ্ন ওঠে, ‘ভারতীয় এলাকায় চীন না ঢুকলে এতজন সেনা মারা গেলেন কী করে? তা হলে কি ধরে নিতে হবে ভারতীয়রা চীনের জমিতে ঢুকেছিল?’
মোদির এমন মন্তব্যের পর নানা জন প্রশ্ন তুললেও সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য সবার নজর কেড়েছে। তিনি বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ সেনাদের বলিদান যাতে ব্যর্থ না হয়, সরকারকে তা নিশ্চিত করতে হবে। ন্যায়বিচার দিতে হবে। নইলে মানুষের আস্থা ও ভরসার সঙ্গে ‘ঐতিহাসিক বিশ্বাসঘাতকতা’ করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমরা এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে রয়েছি। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কোন চোখে আমাদের দেখবে, তা সরকারের কাজকর্ম ও সিদ্ধান্তই ঠিক করে দেবে। দেশকে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাদের বোঝা উচিত কর্তব্যের গুরুত্ব কতটা। আমাদের গণতন্ত্রে সেই দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী ও তার কার্যালয়ের।’
মনমোহন সিং বলেন, ‘আমরা ওদের (চীনের) ভয় ও হুমকির কাছে মাথা নোয়াতে পারি না। সার্বভৌমত্ব নিয়ে সমঝোতাও করতে পারি না। প্রধানমন্ত্রীর উচিত তার মন্তব্য অন্য পক্ষ যেন নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে না পারে তা নিশ্চিত করা। সবাই সংঘবদ্ধ হয়ে সংকটের মোকাবিলা করতে পারে, সেটাও দেখা দরকার।’
এসএ