মশার লালা থেকে ভ্যাকসিন তৈরির দাবি, রুখবে পরবর্তী মহামারি
মহামারি করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত পুরো বিশ্ব। মারণ এই ভাইরাসের মোকাবিলায় ভ্যাকসিন আবিষ্কারের জন্য শত শত বিজ্ঞানী রাতদিন অনবরত কাজ করে চলেছেন।কিছু ভ্যাকসিন আশার আলো দেখা গেলেও এখনও সম্পূর্ণ কার্যকরী কোনও ভ্যাকসিনের সন্ধান মেলেনি। এর মধ্যেই এমন এক ভ্যাকসিন তৈরির কথা শোনালেন মার্কিন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথের বিজ্ঞানী ও সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ জেসিকা ম্যানিং; যা যে কোনও সংক্রামক ব্যাধি বা মহামারীর প্রকোপ রুখে দিতে পারবে।
জেসিকা বলছেন, মশাবাহিত যেসব রোগ মানুষের শরীরে বাসা বাঁধে, সেই রোগের জীবাণু দিয়েই তৈরি হচ্ছে ভ্যাকসিন। তার দাবি, মশা থেকে যেসব জীবাণু বা প্যাথোজেন মানুষের শরীরে ঢোকে এবং ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, জিকা, হলুদ জ্বর, বা মেয়ারোর মতো ভাইরাসের রূপ নেয়, সেইসব প্যাথোজেন দিয়েই তিনি তৈরি করছেন এই ইউনিভার্সাল ভ্যাকসিন। এই ভ্যাকসিন শরীরে গিয়ে এমন অ্যান্টিবডি তৈরি করবে যা যে কোনও সংক্রমণ আটকাতে পারবে।
মশার লালা বা থুতুতে পাওয়া প্রোটিন কাজে লাগানো হবে এই ভ্যাকসিনে। এই গবেষণা সফল হলে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, জিকা, হলুদ জ্বর, পশ্চিম নাইল বা মেয়ারোর মতো ভাইরাস এবং যেকোনও সংক্রামক রোগকে প্রতিরোধ করা সক্ষম হবে বলে দাবি জেসিকার।
বৃহস্পতিবার দ্যা ল্যান্সেট জার্নালে জেসিকা ও তার সহকর্মীদের গবেষণার প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। মশার লালা থেকে তৈরি এই ভ্যাকসিন প্রথমবার মানুষের শরীরে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়েছে।
৪৯ জন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ ব্যক্তির শরীরে এই ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। দুই দফায় এই ভ্যাকসিনের ট্রায়াল হবে। প্রথমে দুটি ডোজে এই ভ্যাকসিন দেয়ার কয়েক সপ্তাহ পরে ব্যক্তিকে মশার কামড় খাইয়ে দেখা হবে শরীরে কি পরিমাণ অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। মশার কামড়ের পর যদি দেখা যায়, ব্যক্তির শরীরে কোনও সংক্রমণ ঘটেনি; তাহলে আরও কয়েকবার মশার কামড় দেয়া হবে। তারপরও সুস্থ থাকলে বুঝতে হবে রোগ প্রতিরোধকারী শক্তিশালী অ্যান্টিবডি তৈরিতে সক্ষম এই ভ্যাকসিন। মার্কিন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথের বিজ্ঞানী জেসিকা ম্যানিং ও তার টিমের দাবি আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানে এটাই হবে সবচেয়ে বড় আবিষ্কার। নিউজ১৮।
এসআইএস/এমকেএইচ