করোনা: কলকাতায় বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেয়া হচ্ছে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন
নভেল করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় ম্যালেরিয়ানিরোধী ওষুধ হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের কার্যকারিতা নিয়ে নানা ধরনের বিতর্ক চললেও মহামারি মোকাবিলায় এই ওষুধেই ভরসা করছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের কলকাতা পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। সেখানকার যেসব এলাকায় করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, পৌর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সেসব এলাকার বাসিন্দাদের হাতে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন তুলে দেয়া হচ্ছে। করোনার উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে কীভাবে ওই ওষুধ খাওয়া যেতে পারে, সে বিষয়েও সচেতন করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
পশ্চিমবঙ্গে প্রতিদিনই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। গত সাত দিনে কলকাতায় আক্রান্তের সংখ্যা পৌরসভার স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে। গত ২৯ মে থেকে ৪ জুন পর্যন্ত কলকাতায় চিকিৎসাধীন করোনা রোগীর সংখ্যা ৩১০। ছয়দিনে গড়ে ৪৪ জন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৩৮ জনের। এই পরিস্থিতিতে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ওষুধই পথ দেখাতে পারে বলে মনে করছে পৌরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ।
শুক্রবার পৌরসভার ৭২ নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কিছু এলাকার বাসিন্দাদের হাইড্রোক্সিক্লোরােকুইন ওষুধ দেয়া হয়। দুপুর ১২টা থেকে ল্যান্সডাউন পদ্মপুকুরের কাছে রামময় রোডের একটি বহুতল ভবনে দুই নারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বাসিন্দাদের হাতে ওষুধ তুলে দেন।
সেখানকার বাসিন্দা শর্মিষ্ঠা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, করোনার উপসর্গ দেখা দিলে কীভাবে ওষুধ খাওয়া যেতে পারে তা বুঝিয়ে দিয়েছেন পৌরসভার কর্মীরা। তবে বাসিন্দাদের অনেকে এই ওষুধ নিতে অস্বীকার করেছেন।
স্থানীয়রা বলছেন, পৌরসভার কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে হাইড্রোক্সিক্লোরােকুইন ওষুধ সরবরাহ করেছেন। এই ওষুধ চিকিৎসকদের পরামর্শ ছাড়া খেতে নিষেধ করেছেন তারা। যদি করোনার মতো উপসর্গ ধরা পড়ে, তাহলে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন কাজে লাগতে পারে বলেও তাদের জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে তারা সতর্ক করে বলেছেন, ১৮ বছরের নিচে এবং ৬০ বছরের ওপরের কেউ এই ওষুধ সেবন করতে পারবেন না। হৃদরোগ, ডায়াবেটিসের মতো শারীরিক জটিলতা থাকলে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে হবে।
পশ্চিমবঙ্গের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, ‘প্রেসক্রিপশন ছাড়া এই ওষুধ একেবারে খাওয়া উচিত নয়। সবার শরীরে এর কাজ সমান নয়। সবার শরীরের ধরনও সমান নয়। পৌরসভা নিশ্চয়ই চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়েই সেবন করতে বলেছে। সেই নির্দেশ মেনে চলা উচিত। এই ওষুধ খাওয়ার একটি নির্দিষ্ট নিয়মও আছে। সেই নিয়ম না মেনে খেলে বিপদ বাড়বে।’
তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এই ওষুধটি নিয়ে প্রচার চালানো জরুরি হয়ে পড়ছে। কখন সেবন করতে হবে, তা যেমন জানা জরুরি; ডোজ কেমন হবে, সেটিও জানা জরুরি। পৌরসভার অবশ্যই বারবার বলে দেয়া উচিত, প্রত্যেকে যেন চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন সেবন করেন।’ আনন্দবাজার।
এসআইএস/পিআর