পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের
মহামারির মধ্যে বিশ্ব যখন বিপর্যস্ত তখন ২৮ বছর পর আবারও বিশ্বের হুমকি হিসেবে বিবেচিত পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালানোর পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট সূত্রের বরাতে জানাচ্ছে, এ নিয়ে জাতীয় পর্যায়ের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের নিয়ে চলতি মাসে একটি বৈঠকও হয়েছে।
যদি এমনটা হয় তাহলে ১৯৯২ সালের পর প্রথমবারের মতো পারমাণবিক অস্ত্রের সম্ভাব্যতা যাচাই করতে যাচ্ছে ওয়াশিংটন। সূত্রের বরাতে শুধু ওয়াশিংটন পোস্ট নয় ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানও এমন খবর দিয়ে বলছে, মূলত রাশিয়া ও চীনকে চাপে রাখতেই এমন পরীক্ষার পরিকল্পনা ট্রাম্প প্রশাসনের।
শুধু তাই নয়, লেজার রশ্মি ছুঁড়ে শত্রুর যুদ্ধবিমানকে আকাশপথেই ধ্বংস করে দিতে সক্ষম অত্যাধুনিক অস্ত্রের সফল পরীক্ষাও চালিয়েছে মার্কিন নৌবাহিনী। শুক্রবার এক বিবৃতিতে সফল এই পরীক্ষার তথ্য জনসম্মুখে প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল নৌবহরের সদর দফতর।
রাশিয়া ও চীনকে একটি ত্রিপক্ষীয় অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তিতে আসতে বাধ্য করার কৌশল হিসেবেই পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালানোর এই পরিকল্পনা করছে ট্রাম্প প্রশাসন। মার্কিন কর্মকর্তাদের দাবি, রাশিয়া ও চীন গোপনে অনেক অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে।
ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেনে দেশটির শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের বরাতে বলা হচ্ছে, গত ১৫ মে জাতীয় প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তাদের অংশগ্রহনে এ নিয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে বৈঠকে পারমাণবিক পরীক্ষা চালানো নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। সিদ্ধান্ত ছাড়াই আলোচনা মূলতবি হয়।
বৈঠকে উপস্থিত মার্কিন কংগ্রেসের একজন প্রতিনিধি বলেছেন, বৈঠকে কয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন, যারা মনে করেন, রাশিয়া ও চীনকে চাপে রাখতে পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর চিন্তাটি খুবই ভয়ঙ্কর। এভাবে এক অনভিপ্রেত পারমাণবিক অস্ত্রের প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যেতে পারে বিশ্বে।
ট্রাম্প প্রশাসন গত সপ্তাহে জানায়, ২০০২ সালের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া ‘ট্রিটি অব ওপেন স্কাইজ’ চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেবে তারা। অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তিগুলোর মধ্যে এখন টিকে রয়েছে শুধু কেবল ২০১০ সালে স্বাক্ষরিত রুশ-মার্কিন পারমাণবিক অস্ত্র সীমিতকরণ চুক্তি ‘নিউ স্টার্ট’।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে পারমাণবিক যুদ্ধের কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা কেবল নিজ অস্ত্রের সক্ষমতা বাড়াচ্ছেই না বরং হালকা পরিস্থিতিতেও এসব অস্ত্র ব্যবহারের সীমারেখা নামিয়ে আনছে। ফলে সামান্যতেই পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের আশংকা বাড়ছে।
এসএ