করোনা মহামারির মধ্যে জন্মহারে শীর্ষে থাকবে ভারত
চলতি বছরের মার্চ থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে বিশ্বজুড়ে ১১ কোটি ৬০ লাখ শিশুর জন্ম হবে। এর মধ্যে শীর্ষ স্থানে থাকবে ভারত। জাতিসংঘের হিসাব বলছে, এ বছরের মার্চ থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ভারতে ২ কোটির বেশি শিশু জন্ম নেবে।
আগামী ১০ মে আন্তর্জাতিক মাতৃদিবস। তার আগে বুধবার (৬ মে) জাতিসংঘের শিশুকল্যাণ সংস্থা ইউনিসেফের পক্ষ থেকে এই হিসাব প্রকাশ করা হয়।
সংস্থাটি বলছে, গত ১১ মার্চ থেকে আগামী ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতে ২ কোটি ১০ লাখ শিশুর জন্মের সম্ভাবনা রয়েছে। আর জানুয়ারি থেকে হিসাব করলে সংখ্যাটা দাঁড়াচ্ছে ২ কোটি ৪১ লাখে। জাতিসংঘের জনসংখ্যা বিভাগের ২০১৯ সালের তথ্যসূত্র ধরেই এই হিসাব করা হয়েছে।
ভারতের পরেই আছে চীন। দেশটিতে মার্চ-ডিসেম্বরে ১ কোটি ৩৫ লাখ শিশু জন্ম নেবে। ৬৪ লাখ শিশু জন্মানোর আভাস নিয়ে তৃতীয় স্থানে নাইজিরিয়া। পাকিস্তান আর ইন্দোনেশিয়ায় যথাক্রমে ৫০ লাখ ও ৪০ লাখ শিশুর জন্ম হবে।
ইউনিসেফ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, এই পাঁচটির মধ্যে অধিকাংশ দেশে নবজাতকের মৃত্যুহার বেশি।করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে তা আরও বাড়তে পারে। সেই সঙ্গে ইউনিসেফের আশঙ্কা, করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধের জেরে প্রসূতি এবং নবজাতকের স্বাস্থ্য পরিষেবায় বড় রকম বিঘ্ন ঘটতে পারে। ফলে এমনিই অতিমারির মধ্যে জন্ম নেয়ার কারণে মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সম্পর্কে চিন্তার কারণ থাকছে। সেই সঙ্গে লকডাউন এবং সংশ্লিষ্ট কড়াকড়ির ফলে স্বাস্থ্য পরিষেবা ধাক্কা খাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, প্রসূতি ও শিশুর দেখভাল করার লোক পাওয়ার অসুবিধা, ওষুধপত্র এবং অন্যান্য জিনিসপত্রের ঘাটতি, হাসপাতালে জায়গা পাওয়ার সঙ্কট পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলতে পারে।
ইউনিসেফের মতে, অপেক্ষাকৃত ধনী দেশও এই উদ্বেগের বাইরে নয়। সম্ভাব্য জন্মাহারের তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্চ-ডিসেম্বরের মধ্যে সেখানে ৩৩ লাখ শিশু জন্ম নেবে। সেখানেও রয়েছে সঙ্কট। ফলে সব রাষ্ট্রপ্রধানের কাছেই ইউনিসেফের আবেদন, প্রসূতি ও নবজাতকের জরুরি পরিষেবার দিকে যেন নজর দেয়া হয়। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা, প্রতিষেধকের জোগান যেন ব্যাহত না হয়।
ইউনিসেফের প্রশাসনিক প্রধান হেনরিয়েটা ফোরে বলেন, করোনাভাইরাসে আঘাত মাতৃত্বকে কতটা বদলে দিতে চলেছে, সেটা এখনও পুরোটা কল্পনা করা যাচ্ছে না।
হবু মায়েদের জন্য হেনরিয়েটার বার্তা, লাখ লাখ মায়েরা তাদের মাতৃত্বের যাত্রাপথ শুরু করেছিলেন অন্য এক পৃথিবীতে। তারা এবার সন্তান জন্ম দেবেন এক অন্য পৃথিবীতে। এই পৃথিবীতে তাদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে ভয় পেতে হবে। এই পৃথিবীতে তাদের জরুরি পরিচর্যা ব্যাহত হতে পারে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
এমএসএইচ/জেআইএম