ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

তুরস্কের পিপিই মানসম্মত নয় বলে প্রত্যাখ্যান করল ব্রিটেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ১১:১১ পিএম, ০৭ মে ২০২০

তুরস্ক থেকে অর্ডার করা চার লাখ পিপিইর মধ্যে আমদানি করা অর্ধেক মানসম্মত নয় বলে অভিযোগ তুলেছে ব্রিটেনের সরকার। বিমানবাহিনীর বিমানে অর্ডারকৃত দুই লাখ পিপিই গাউন দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য সেবাকর্মীদের জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল। এখন সেগুলো গুদামে ফেলে রাখা হয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, তুরস্কের যে প্রতিষ্ঠানটি এই পিপিই বা ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে তাদের মুখপাত্র বলেছেন তারা এ ধরনের কোন অভিযোগ পাননি।

সেলেগ্না টেকস্টিল নামেও ওই সংস্থার মুখপাত্র মেহমেত দুযেন বিবিসিকে বলেন, ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এনএইচএস অথবা আঙ্কারায় ব্রিটিশ দূতাবাস বা ব্রিটিশ কোনো কর্মকর্তা তাদের কাছে কেউই এই পিপিই-র মান নিয়ে কোন অভিযোগ করেনি।

তিনি বলেন, ‘যে ফ্যাব্রিক এবং অন্যান্য যেসব উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে তার সবকিছুই অনুমোদিত জিনিস। কোন ত্রুটি থাকলে তা সংশোধনের জন্য তারা প্রস্তুত ছিল ব্রিটেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলে আসছে তারা ‘পিপিই জোগাড় করার জন্য দিবারাত্র কাজ করছে’।

যুক্তরাজ্যে গত কয়েক মাস ধরে ডাক্তার, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা গাউন, মাস্ক ও গ্লাভসের যথেষ্ট সরবরাহ না পাওয়ার অভিযোগ করে আসছিলেন। এই বিতর্কের মধ্যেই ব্রিটিশ সরকার এপ্রিল মাসে ঘোষণা করে যে তারা তুরস্ক থেকে প্রচুর পরিমাণ সুরক্ষা সরঞ্জাম আনার ব্যবস্থা করতে পেরেছে।

যারা কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন বা আক্রান্তদের মুখোমুখি যাদের হতে হচ্ছে, সেই সামনের সারির কর্মীদের জন্য পিপিই বা সুরক্ষা সরঞ্জাম অত্যাবশ্যক। কর্মীরা উদ্বেগে ছিলেন যে সুরক্ষা সরঞ্জাম ছাড়া তারা এই ভাইরাসে সংক্রমিত হতে পারেন বা নিজেরাও তা ছড়াতে পারেন।

এরপর কিছু বিলম্বের পর শেষ পর্যন্ত বিমানবাহিনী বিমান পাঠানো হয় তুরস্কের ইস্তাম্বুলে এবং এসব সরঞ্জাম যুক্তরাজ্যে পৌঁছায় গত ২২শে এপ্রিল। কত পিপিই ওই চালানে এসেছিল তা জানা যায়নি। তবে মোট অর্ডারের অর্ধেক নিয়ে আসার ধারণ ক্ষমতা ওই বিমানের ছিল।

এখন ব্রিটিশ সরকার বলছে, যেসব সুরক্ষা গাউন সরবরাহ করা হয়েছে সেগুলো ব্যবহারযোগ্য নয়, কারণ সেগুলো ব্রিটিশ মানসম্মত নয়।

এনএইচএস সমিতি যা স্বাস্থ্য ও কেয়ার কর্মীদের প্রতিনিধিত্ব করে, তার নির্বাহী প্রধান নিয়াল ডিকসন বলেছেন ওই চালানটি ছিল খুবই বড় এবং সরকার তার প্রতিশ্রুতি না রাখতে পারায় সামনের সারিতে কর্মরত কর্মীরা সরকারের প্রতি তাদের আস্থা হারিয়েছে।

একজন স্বাস্থ্যকর্মী নিজের নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ‘ব্রিটেনের সুরক্ষা সরঞ্জামের এই অভাব ''বন্দুক ছাড়া সৈন্যদের যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানোর সামিল।’

তিনি বলেছেন, ‘গাউনের খুবই অভাব। আপনি যখন দরজা ঠেলে ঢুকছেন, শুনছেন বেচারা রোগীরা কাশছেন, তাদের থুতু ছিটাচ্ছে চারিদিকে, তখন আপনার অবশ্যই মনে হবে, আমি আক্রান্ত হবো না তো? বাসায় ভাইরাস নিয়ে গিয়ে পরিবারের অন্যদের দেব না তো? পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর উদ্বেগের।’

গত সপ্তাহেই সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে হাসপাতালগুলো যেন নিজেরা সুরক্ষা সরঞ্জাম বা পিপিই সংগ্রহের জন্য অর্ডার না দেয়। সরকারই তাদের জন্য এগুলো সংগ্রহ করছে।

তাদের ওপরই নির্ভর করতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, পিপিই-র অভাব শুধু ব্রিটেনে নয়, এখন সারা পৃথিবী জুড়ে এর ঘাটতি রয়েছে।

তারা যুক্তি দিচ্ছে, ‘সুরক্ষা সরঞ্জাম যদি নিরাপত্তার মান অনুযায়ী না হয়, সেগুলোর মান নিয়ে যদি আমাদের সংশয় থাকে, তাহলে তা আমরা কখনই সামনের সারিতে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীদের তা সরবরাহ করবো না।’

এসএ