সাইপ্রাসে ড্রোন দিয়ে লকডাউন নিয়ন্ত্রণ
মাহাফুজুল হক চৌধুরী, সাইপ্রাস থেকে
ছড়িয়ে পড়া মহামারি করোনাভাইরাস মোকাবিলা করার জন্য ইস্টার হলিডেতে হেলিকপ্টার এবং ড্রোন দিয়ে পুরো সাইপ্রাসকে পরিদর্শনে রাখবে দেশটির প্রশাসন। শনিবার বিবৃতিতে দেশটির আইনমন্ত্রী জর্গোস স্যাভাইডস এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি পুলিশকে ইস্টার সাপ্তাহিক ছুটিতে মোটর যানবাহগুলিতে আরও চেক বাড়ানোর নির্দেশ দেন এবং সেইসাথে হেলিকপ্টার ও ড্রোন দিয়ে সাইপ্রাসের সমস্ত এলাকা পরিদর্শন করার নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, বন্ধের ভেতর যেন কেউ কারো বাড়িতে বেড়াতে না যান এবং সবাইকে নিজ নিজ ঘরে বসে প্রার্থনা করার পরামর্শ দিয়েছেন। সাইপ্রাসে গত একমাস ধরে চলছে লকডাউন। এ কারণে প্রায় ব্যবসা বাণিজ্যসহ স্কুল, কলেজ, খেলার মাঠ, মসজিদ, গির্জা সব বন্ধ রাখা হয়েছে।
এদিকে লকডাউন অমান্য করে লারনাকার আভাদেলোরোতে শুক্রবার সন্ধ্যায় একটি গির্জায় প্রার্থনায় অংশ নিতে আসা দশজন সিপ্রিয়টকে জনপ্রতি ৩০০ ইউরো করে জরিমানা করার কথা জানিয়েছে পুলিশ। এর আগে লকডাউন অমান্য করে মসজিদ খোলার অভিযোগে বাংলাদেশি অধ্যুষিত নিকোশিয়া সেন্ট্রাল মসজিদ থেকে এক বাংলাদেশি ইমামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সারাবিশ্বে চলমান মহামারি কোভিড-১৯ এ সাইপ্রাসে এখন পর্যন্ত মোট ৭৭০ জন আক্রান্ত এবং ১২ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
সুস্থ হয়েছেন ৭৭ জন। সারা বিশ্বে সবাই করোনাভাইরাসে আতংকের মধ্যে থাকলেও সাইপ্রাসে আক্রান্তের তুলনায় মৃতের সংখ্যা কম হওয়ায় দেশটিতে বসবাসরতরা কিছুটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় আছেন।
সর্বপ্রথম চীন থেকে শুরু হওয়া করোনাভাইরাস নিয়ে যখন সারা বিশ্ব আতঙ্কিত, চীনকে নিয়ে সবাই চিন্তিত হয়ে পড়েছে, এরপর পরেই ইতালিতে ছড়িয়ে গেলে
ইতালি চীনকে অল্প সময়ের মধ্যেই ছাড়িয়ে যায়। তারপর ইতালি সবার নজরে আসলে সবাই এইবার চীনকে রেখে ইতালিকে নিয়ে মাতামাতি শুরু করে। তারপর আলোচনায় আসে স্পেন।
স্পেন নীরবেই চীন ইতালি ফ্রান্স, জার্মানি, ইউকে সবাইকে ছাড়িয়ে এখন আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যায় দ্বিতীয় অবস্থানে স্পেন। আর কারো ধরাছোঁয়ার বাইরে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান এখন সবচেয়ে নাজুক। নিয়ন্ত্রণহীন বিমান যেমন নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে ধাবিত হয়, ঠিক তেমনিভাবে যুক্তরাষ্ট্র মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে।
এ পর্যন্ত সারা বিশ্বে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২২ লাখ ৮২ হাজার, মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ৫৭ হাজার ছাড়িয়েছে। সুস্থ হয়ে ঘরে ফেরার সংখ্যা ৫ লাখ ৮৭ হাজারে দাঁড়িয়েছে। তারমধ্যে শীর্ষ অবস্থানে থাকে আমেরিকায় আক্রান্তের সংখ্যা ৭ লাখ ১৩ হাজার, মৃত্যু হয়েছে ৩৮ হাজার এবং রিকোভার হয়েছে মাত্র ৬৪ হাজার।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা স্পেনে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৯২ হাজার, মৃতের সংখ্যা ২১ হাজার এবং রিকোভার হয়েছে ৭৫ হাজার। তৃতীয় অবস্থানে থাকা ইতালিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৭৩ হাজার, মৃতের সংখ্যা ২৩ হাজার, এবং রিকোভার হয়েছে ৪৩ হাজার। ইতালির পরেই আছেন ফ্রান্স, জার্মানি, ইউকের পরেই
চায়নার অবস্থান।
এমআরএম/এমকেএইচ