উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠাতার জন্মদিনে লাপাত্তা কিম
গত ১৫ এপ্রিল ছিল উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ২য় কিম সাংয়ের জন্মদিন। প্রতিবছরই তার জন্মদিনকে কেন্দ্র করে উত্তর কোরিয়ায় নানা ধরনের আয়োজন করা হয়। গত বছরগুলোতে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ এবং বিশালাকারে সেনাবহর প্রদর্শন করতে দেখা গেছে।
এমনকি দেশটির ক্যালেন্ডারের যাত্রাও শুরু হয়েছে এপ্রিলের ১৫ তারিখ থেকেই। কিন্তু এ বছরের চিত্র অনেকটাই ভিন্ন। দেশজুড়ে আয়োজন ছিল সীমিত। এমনকি ২য় কিম সাংয়ের জন্মদিনের কোনো অনুষ্ঠানেই দেখা যায়নি দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনকে। তিনি একেবারেই লাপাত্তা। যা এর আগে কখনওই ঘটেনি।
আগের বছরগুলোতে দেশব্যাপী এই আয়োজনে প্রতিবারই তাকে অংশ নিতে দেখা গেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী এক সংকট তৈরি হয়েছে। বর্তমান বিশ্বে এখন এক আতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস। মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হয় এই প্রাণঘাতী ভাইরাস।
ধারণা করা হচ্ছে, করোনা পরিস্থিতির কারণেই উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠাতার জন্মদিনে অংশ নেননি কিম। যদিও এখনও পর্যন্ত দেশটিতে কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়নি বলে দাবি উত্তর কোরিয়ার। এক গণস্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানিয়েছেন, করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী যে মহামারি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে তারা।
পিয়ংইয়ং বলছে, সেখানে এখনও কারো শরীরে করোনার উপস্থিতি ধরা পড়েনি। অবশ্য শুরু থেকেই উত্তর কোরিয়া দাবি করে আসছে যে, দেশটিতে একজনও করোনা রোগী নেই।
যেখানে বিশ্বের ২১০টি দেশ ও অঞ্চলে করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে সেখানে চীনের প্রতিবেশী এই দেশটিতে একজনও করোনায় আক্রান্ত হয়নি এমনটা মানতে নারাজ বিশেষজ্ঞরা।
গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহান শহরে প্রথম করোনার উপস্থিতি ধরা পড়ে। এরপর থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই প্রাণঘাতী ভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে।
এদিকে, উত্তর কোরিয়ার দাবি দেশটি চীনের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ, বাণিজ্য স্থগিত এবং প্রথম থেকেই ৩০ দিনের কোয়ারেন্টাইনের কারণেই তাদের দেশ করোনামুক্ত রয়েছে। তবে অনেক বিশেষজ্ঞ বলছেন এটা অসম্ভব।
কারণ চীন থেকে অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়লেও একেবারে সীমান্তে অবস্থিত উত্তর কোরিয়ায় কেউই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়নি এমন দাবি মানা যায় না। বিশেষজ্ঞদের দাবি উত্তর কোরিয়া হয়তো সত্য ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে।
করোনার প্রাদুর্ভাবকে আটকাতেই ডে অব দ্য সান হিসেবে পরিচিত দেশটির প্রতিষ্ঠাতার জন্মদিনে উৎসবে লাগাম টানা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে তরুণ নেতা কিম যেন কোনো ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে না পরেন সেজন্যই তিনি কোনো আয়োজনে অংশ নেননি।
টিটিএন/জেআইএম