লস অ্যাঞ্জেলেসে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু, আক্রান্তের শঙ্কা ১০ লাখ
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে একদিনে মারা গেছেন আরও ৪০ জন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার জনস্বাস্থ্য দফতর থেকে এ মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়। লস অ্যাঞ্জেলেসে একদিনে এটাই সর্বোচ্চ মৃত্যুর সংখ্যা।
এর আগে সোমবারে মৃতের সংখ্যা ছিল ২৫ জন। তবে ওই দিনের আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৩৯ জন। আক্রান্তের দিক থেকে যা ছিল গত ২৬ মার্চ থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত সবচেয়ে কম। কিন্তু হঠাৎ করেই বেড়ে যায় মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা।
জনস্বাস্থ্য দফতরের পরিচালক বারবারা ফেরার জানান, লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টিতে মৃত্যুর সংখ্যা এখন ৩৬০। মৃত্যুর হার বেড়েছে ৩.৬ শতাংশ। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৭০ জন। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ৪৭ জন। এ পর্যন্ত মোট ৬৩ হাজারেরও বেশি সংখ্যক মানুষকে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হয়েছে। যাদের মধ্যে শতকরা ১১ শতাংশ কোভিড-১৯ পজিটিভ পাওয়া গেছে।
প্রতিদিনের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে তিনি আরও জানান, লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির মোট জনসংখ্যা এক কোটি। তবে করোনায় আক্রান্ত হতে পারে ১০ লাখ মানুষ!
এদিকে কোভিড-১৯-এর লক্ষণ রয়েছে এমন সকলের জন্য টেস্ট উন্মুক্ত করে দিয়েছেন লস অ্যাঞ্জেলেস মেয়র এরিক গারসেটি। ঘরের বাইরে বের হলে মুখে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলকসহ শহরের নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য পরিবারের সংখ্যাভেদে ৭০০, ১১০০ ও ১৫০০ ডলার আর্থিক অনুদানের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
অঙ্গরাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম সকলকে ‘স্টে-অ্যাট-হোম (ঘরে থাকুন) আদেশ মেনে চলার অনুরোধ জানিয়েছেন। লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টিতে এ আদেশ আগামী ১৫ মে পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার পর্যন্ত পুরো ক্যালিফোর্নিয়ার মৃতের সংখ্যা ছিল ৭৮৯ জন এবং আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ হাজার ৭৪২ জন। ক্যালিফোর্নিয়ায় আগামী মে মাসের আগে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ও মৃত্যুর সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌঁছাবে না বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২ হাজার ১২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটিতে একদিনে এটাই সর্বোচ্চ মৃত্যুর সংখ্যা।
ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ২৬ হাজার ৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এর আগে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৭৪। গত ১০ এপ্রিল একদিনেই সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড ছিল। কিন্তু স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী মৃত্যুর রেকর্ড আগের সব রেকর্ডকে অতিক্রম করেছে।
দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যাও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। এখন পর্যন্ত দেশটিতে ৬ লাখ ১৩ হাজার ৮৮৬ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। অপরদিকে ইতোমধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছে ৩৮ হাজার ৮২০ জন। তবে ১৩ হাজার ৪৭৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বিশ্বের ২১০টি দেশ ও অঞ্চলে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যায় সবদেশের শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে করোনার হানায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্য।
এসআর/জেআইএম