মালয়েশিয়ার রাজপ্রাসাদে করোনার হানা, কোয়ারেন্টাইনে রাজা-রানি
মালয়েশিয়ার রাজপ্রাসাদের সাতজন কর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর দেশটির রাজা এবং রানি কোয়ারেন্টাইনে গেছেন। দেশটির রাজা সুলতান আব্দুল্লাহ সুলতান আহমদ শাহ এবং তার স্ত্রী রানি টুঙ্কু আজিজাহ আমিনাহ মাইমুনাহ ইস্কান্দারিয়াহর করোনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এলেও সতর্কতা হিসেবে ১৪ দিনের জন্য কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে বলে রাজপ্রাসাদের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
এদিকে, রাজপ্রাসাদের সংক্রমিত সাত কর্মীকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা এই সংক্রমণের উৎস জানার চেষ্টা করছেন। কর্মীরা করোনায় সংক্রমিত হওয়ার পর জীবাণুনাশক ছিটিয়ে রাজপ্রাসাদ পরিষ্কার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দেশটিতে নতুন করে আরও ২৩৫ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। এনিয়ে মালয়েশিয়ায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ছাড়িয়েছে। এছাড়া এখন পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় মারা গেছেন অন্তত ২১ জন।
দেশটিতে করোনা সংক্রমিতদের অধিকাংশই রাজধানী কুয়ালালামপুরের পাশে শ্রী পেটালিংয়ের একটি মসজিদে তাবলিগ জামায়াতে অংশ নিয়েছিলেন। পেটালিংয়ের ওই তাবলিগ জামায়াতে প্রায় ২০ হাজার মানুষ অংশ নিয়েছিলেন; যাদের তিন-চতুর্থাংশই মালয়েশিয়ার নাগরিক।
এই তাবলিগে অংশ নেয়ার পর বাংলাদেশ, ভারত, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর এবং ইন্দোনেশিয়ার বেশ কয়েকজন নাগরিকও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
গত সপ্তাহে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষের ঘর থেকে বাইরে বের হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এছাড়াও দেশের জরুরি সেবাখাতের প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট ছাড়া সব স্কুল এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, বিদেশিদের দেশে প্রবেশ এবং মালয়েশিয়ানদের বিদেশ গমনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
লকডাউন কার্যকর করতে দেশটির পুলিশ সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন। তবে লোকজন নিষেধাজ্ঞা উপক্ষো করে চলাচল করায় পরবর্তীতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করে দেশটির সরকার।
মার্চের শেষের দিক পর্যন্ত এই কড়াকড়ি কার্যকর থাকতে পারে বলে জানানো হলেও করোনার প্রকোপ বাড়তে থাকায় পরবর্তীতে তা বাড়িয়ে মধ্য এপ্রিল করা হয়েছে।
গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে প্রাণঘাতী এই করনোভাইরাসের উৎপত্তি হয়। চীনে ৩ হাজার ২৮৭ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়ে এই ভাইরাস এখন বিশ্বের ১৯৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। চীন করোনার বিস্তার ঠেকাতে সক্ষম হলেও বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৮৮ হাজার ৩২৮ এবং মৃত ২২ হাজার ৭০ জনে। এছাড়া এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ১৭ হাজার ৬০৮ জন।
সূত্র : ডেইলি মেইল, এপি।
এসআইএস/পিআর