বিদেশফেরত সংক্রমণের কারণে চীনে আরেক দফা মহামারির শঙ্কা
টানা তিন মাস প্রাণপণ লড়াইয়ের পর করোনাভাইরাস মহামারি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এনেছে চীন। টানা কয়েকদিন দেশটিতে নতুন করে কেউ আক্রান্ত হননি। তারপরও বেড়েছে রোগীর সংখ্যা। কারণ, বিদেশফেরত নাগরিকদের শরীরে ঠিকই পাওয়া যাচ্ছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে শিগগিরই চীন আরেক দফা মহামারির মুখোমুখি হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন দেশটির এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
নভেল করোনাভাইরাসের উৎস উহানে মহামারি নিয়ন্ত্রণে যে মেডিকেল টিম কাজ করছে, এর নেতৃত্ব রয়েছেন প্রফেসর লি লানজুয়ান। বলাবাহুল্য, এই কাজে দারুণ সফল দলটি। তারপরও দুশ্চিন্তা দূর হয়নি।
প্রফেসর লি বলেন, ‘বেইজিং, সাংহাই, গুয়াংঝু, শেনঝেন ও হাংঝৌর মতো শহরগুলো অনবরত আন্তর্জাতিক যোগাযোগ রয়েছে। আমি খুব উদ্বিগ্ন যে, বিদেশফেরত ঘটনাগুলো আমাদের দেশে আরও বড় মহামারির সূত্রপাত করতে পারে।’
চায়না নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, বিদেশফেরত সংক্রমণ মহামারি নিয়ন্ত্রণে তাদের কাজকে আরও কঠিন করে তুলছে। ৭৩ বছর বয়সী এ চিকিৎসক বলেন, করোনা মহামারি অন্যান্য শহরে ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে আমাদের আরও কঠিন প্রচেষ্টা ও নিরলস কাজ করা অব্যাহত রাখা দরকার।
প্রফেসর লির ধারণা যে অমূলক নয় ইতোমধ্যেই তার নমুনা দেখা দিয়েছে চীনে। সম্প্রতি দেশটিতে বিদেশফেরত এক রোগীর সংস্পর্শে গিয়ে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন গুয়াংঝুর এক চিকিৎসক।
জানা যায়, ওই রোগী কিছুদিন আগে তুরস্ক থেকে ফিরেছেন। তাকে পরীক্ষা করাতে গিয়ে ভাইরাস আক্রান্ত হন ওই চিকিৎসক।
গুয়াংঝুর স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, এটাই বিদেশফেরত রোগীর সংস্পর্শে এ অঞ্চলে প্রথমবার কেউ করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা। এ ধরনের সংক্রমণ আরও বাড়তে থাকলে অচিরেই চীনজুড়ে আবারও ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
গত ৩১ ডিসেম্বর উহানে প্রথমবারের মতো ধরা পড়ে নভেল করোনাভাইরাস। এরপর দ্রুতই তা ছড়িয়ে পড়ে চীনজুড়ে, এরপর বাকি বিশ্বে। এ পর্যন্ত বিশ্বের অন্তত ১৯২টি দেশ ও অঞ্চলে করোনার বিস্তার ঘটেছে। এতে আক্রান্ত হয়েছেন অন্তত সাড়ে ৩ লাখ মানুষ, মারা গেছেন ১৫ হাজারেরও বেশি। এর মধ্যে শুধু চীনের মূল ভূখণ্ডেই আক্রান্ত ৮১ হাজার মানুষ, মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ২৭০ জনের।
গত ২৪ ঘণ্টায় চীনে নতুন করে ৩৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এদের সবাই বিদেশফেরত।
সূত্র: ডেইলি মেইল
কেএএ/এমএস