চীনের সঙ্গে সীমান্ত-বাণিজ্য বন্ধের জন্যই উ. কোরিয়া করোনামুক্ত
উত্তর কোরিয়া দাবি করেছে, দেশটিতে এখন পর্যন্ত কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়নি। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা অসম্ভব। কারণ উত্তর কোরিয়ার প্রতিবেশী চীনে এখন পর্যন্ত ৮০ হাজার ৮৯৪ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৩ হাজার ২৩৭ জন।
গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। এরপর থেকেই তা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত ১৬৫টি দেশ ও অঞ্চলে করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতোমধ্যেই করোনাকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করেছে। বিশ্বের অনেক দেশেই করোনার কারণে মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। লোকজন ঘর থেকে বের হতে পারছে না, দোকান-পাট, স্কুল, হাসপাতাল সব বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে উত্তর কোরিয়া বলছে, তাদের দেশে এখনও পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ‘শূন্য’।
দেশটির দাবি চীনের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ, বাণিজ্য স্থগিত এবং ৩০ দিনের কোয়ারেন্টাইনের কারণেই তাদের দেশ করোনামুক্ত রয়েছে। তবে অনেক বিশেষজ্ঞ বলছেন এটা অসম্ভব। কারণ চীন থেকে অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়লেও একেবারে সীমান্তে অবস্থিত উত্তর কোরিয়ায় কেউই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়নি এমন দাবি মানা যায় না। বিশেষজ্ঞদের দাবি উত্তর কোরিয়া হয়তো সত্য ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছে।
এর আগে বেশ কিছু গণমাধ্যমের খবরে এসেছে যে, উত্তর কোরিয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে বেশ কয়েকজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ফক্স নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে সাবেক সিআইএ বিশেষজ্ঞ জুং এইচ পাক বলেন, উত্তর কোরিয়ায় একজনও করোনায় আক্রান্ত হয়নি এটা অসম্ভব।
অপরদিকে, উত্তর কোরিয়ার কর্মকর্তারা বলছেন, করোনা সন্দেহে ৫ হাজার ৪শ জনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছিল। কিন্তু কোয়ারেন্টাইন শেষে দেখা গেছে এরা কেউই করোনায় আক্রান্ত নন।
ফোর্সেস কোরিয়ার কমান্ডার জেনারেল রবার্ট আব্রামস উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনীর সাম্প্রতিক কার্যক্রম হ্রাস পেয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। তার মতে করোনায় আক্রান্তের ঘটনা ঘটেছে বলেই সেখানে এমনটা হচ্ছে।
তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়া একটি আবদ্ধ দেশ। আমরা তাই তাদের সম্পর্কে বেশি কিছু জানতে পারি না। আমরা জোর দিয়ে এটাও বলতে পারি না যে তাদের দেশে করোনায় আক্রান্ত লোকজন আছেই। তবে আমরা মোটামুটি নিশ্চিত যে, সেখানেও করোনায় আক্রান্তের ঘটনা ঘটেছে।
তিনি আরও বলেন, আমি যেটা জানি যে, তাদের সেনাবাহিনী ৩০ দিন অবরুদ্ধ ছিল। তবে সম্প্রতি তারা আবারও তাদের প্রশিক্ষণ শুরু করেছে। উদাহরণস্বরূপ বলতে পারি, গত ২৪ দিন ধরে তাদের সেনাবাহিনীর একটা বিমানও আকাশে উড়তে দেখা যায়নি।
টিটিএন/জেআইএম