আয়লানের মৃত্যুতে দোষীদের ১২৫ বছরের জেল
২০১৫ সালে সিরীয় শিশু আয়লান কুর্দির করুণ মৃত্যু ঝড় তুলেছিল সারাবিশ্বে। সাগরপাড়ে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা ছোট্ট মরদেহটি দেখে হৃদয় কেঁদেছিল সবার। ওইদিন আয়লানের সঙ্গে তার মা-ভাইসহ মারা যান আরও অন্তত ১১ জন। প্রায় পাঁচ বছর পর ওই ঘটনায় জড়িত তিন পাচারকারীকে ১২৫ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন তুরস্কের একটি আদালত।
তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, আয়লানদের মৃত্যুর ঘটনায় তুরস্ক ও সিরিয়ার একাধিক পাচারকারী চক্র জড়িত। তাদের অনেককেই ইতোমধ্যে গ্রেফতার করে সাজা দেয়া হয়েছে। চলতি সপ্তাহে দক্ষিণাঞ্চলীয় আদানা প্রদেশ থেকে তিন আসামিকে গ্রেফতার করে তুর্কি নিরাপত্তাবাহিনী। হত্যার অভিযোগে শুক্রবার ওই তিনজনকে ১২৫ করে কারাদণ্ড দেন বদ্রাম হাই ক্রিমিনাল কোর্টের বিচারক।
জানা যায়, আয়লানের পরিবার সিরিয়ার কোবানে শহরে থাকতো। সেখানে আইএস জঙ্গিদের সঙ্গে সরকারি বাহিনীর লড়াই শুরু হওয়ার পর তারা পালিয়ে তুরস্কে যায়। সেখান থেকে কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করলে কর্তৃপক্ষ তাদের আবেদন নাকচ করে দেয়। এরপর তারা তুরস্ক থেকে গ্রিসে যাওয়ার চেষ্টা করে।
ছোট্ট আয়লানও তার পরিবারের সঙ্গে গ্রিস যাচ্ছিল। কিন্তু তাদের বহনকারী নৌকাটি সাগরে ডুবে তিন বছর বয়সী আয়লান, তার পাঁচ বছর বয়সী ভাই এবং মায়ের মৃত্যু হয়। তবে সৌভাগ্যক্রমে ওই দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যান আয়লানের বাবা। এ ঘটনায় নৌকার ১৬ আরোহীর মধ্যে ১২ জনই মারা যান।
পরে আয়লানের মরদেহ ভেসে ওঠে তুরস্কের সমুদ্র সৈকতে। সেসময় লাল জামা গায়ে তার নিথর দেহ উপুড় হয়ে পড়ে থাকার দৃশ্য যেন হয়ে উঠেছিল বিশ্বব্যাপী চলমান শরণার্থী সংকটের প্রতিচ্ছবি।
আয়লানের মৃত্যুর পর শরণার্থী ইস্যু নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ। বিভিন্ন দেশ শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার বিষয়ে কিছুটা উদারনীতি অবলম্বন করে। তবে এখনো শরণার্থী স্রোত ইউরোপের একটি বড় সমস্যা। সিরিয়া, ইয়েমেনের মতো যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশগুলোর লোকজন জীবন বাঁচাতে ইউরোপকেই শেষ আশ্রয় মনে করছে। এখনো বহু শরণার্থী ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছে।
কেএএ/এমকেএইচ