ইতালিতে কোয়ারেন্টাইন থেকে পালালে আনা হবে ‘হত্যার অভিযোগ’
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস দেশজুড়ে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ায় এর মোকাবিলায় আরও কঠোর হলো ইতালি সরকার। সর্বোচ্চ ২১ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রেখে নতুন আদেশ জারি করা হয়েছে। এতে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে অস্বীকৃতি জানানোকে ‘বিদ্বেষপ্রসূত হত্যার’ সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
নতুন আদেশে বলা হয়েছে, কোয়ারেন্টাইনে থাকা করোনায় আক্রান্ত কোনো রোগী কোয়ারেন্টাইন থেকে বের হওয়ার উদ্যোগ নিলেই তার বিরুদ্ধে ‘বিদ্বেষপ্রসূত হত্যার’ অভিযোগ আনা হবে। এবং এজন্য ওই ব্যক্তিকে ২১ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।
চীনের পর করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ইতালিতে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১২ হাজার ৪৬২ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে ৮২৭ জনের।
ইতালির সরকার করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে একের পর এক পদক্ষেপ অব্যাহত রেখেছে। ইতোমধ্যে দেশটির উত্তরাঞ্চলে এ ভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করেছে। এ অবস্থায় দেশটির লম্বারদিয়া অঞ্চলসহ ১৪ প্রদেশে জরুরি অবস্থা জারি করেছে প্রধানমন্ত্রী জুসেপ্পে কোন্তি।
আগামী ২৫ মার্চ পর্যন্ত দুই সপ্তাহের জন্য অফিস, আদালতসহ সবধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তবে ফার্মেসি, খাবার সরবরাহ, ব্যাংক, পোস্ট অফিস, সংবাদপত্র বিক্রয়, পেট্রোল পাম্প ইত্যাদি সেবা এ নিষেধাজ্ঞার বাইরে রয়েছে
ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটিতে সন্দেহভাজন করোনা আক্রান্ত রোগীকে বাড়িতে অবস্থান করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ নির্দেশ অমান্য করা হলে ২০৬ ইউরো জরিমানা গুনতে হবে। তবে তাদের দ্বারা অপর কেউ সংক্রমিত হলে কঠিন মূল্য দিতে হবে। এজন্য সর্বোচ্চ ২১ বছর জেল হতে পারে অমান্যকারীর।
ইতালি সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, কোয়ারেন্টাইন থেকে কেউ পালিয়ে গেলে এবং তার দ্বারা কেউ সংক্রমিত হলে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে ‘বিদ্বেষপ্রসূত হত্যাকাণ্ডের’ অভিযোগ আনা হবে। এমনকি তার দ্বারা সংক্রমিত হয়ে কেউ মারা না গেলেও তিনি অসদাচরণের দায়ে অভিভুক্ত হবেন।
করোনা রুখতে ইতালি সরকারের জারি করা এই শাস্তিকে এইচআইভি-এইডস রোগ ছড়ানোর অপরাধের শাস্তির সঙ্গে তুলনা করেছে দেশটির মিডিয়া।
এর আগে ২০১৭ সালে রোমে অনিরাপদ শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের অপরাধে এক ব্যক্তির ২৪ বছরের কারাদণ্ড দেয় দেশটির সরকার।
দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের অন্তত আগামী ৩ এপ্রিল পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে।
তবে দেশটির শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ওয়াল্টার রিকিয়ার্ডি বলেছেন, এই ভাইরাসের সঙ্গে ‘দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের’ জন্য তার দেশের জনগণকে প্রস্তুতি নেয়া উচিত।
এসআর/জেআইএম