করোনাযুদ্ধে প্রাণ হারালেন উহান হাসপাতালের চার চিকিৎসক
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে লড়তে প্রাণ হারিয়েছেন উহান সেন্ট্রাল হাসপাতালের চার চিকিৎসক। সবশেষ সোমবার এই তালিকায় যুক্ত হয়েছেন ডা. ঝু হেপিং। তিনি হাসপাতালটির চক্ষুরোগ বিভাগের নির্বাহী পরিচালক ছিলেন।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম পিপলস ডেইলি জানিয়েছে, সোমবার ৬৬ বছর বয়সী ডা. ঝুকে মৃত ঘোষণা করে উহান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই হাসপাতালেই কাজ করতেন করোনা প্রাদুর্ভাব শুরুর আগেই সবাইকে সাবধান করা ডা. লি ওয়েনলিয়াং। এ নিয়ে গত এক মাসে হাসপাতালটির চার চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারালেন।
জানা যায়, ডা. ঝু হেপিং করোনা সংকটের মধ্যেও নিয়মিত হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগী দেখতেন। ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে কাজ করতে করতেই ভাইরাস আক্রান্ত হন তিনি। পরে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন এ চিকিৎসক।
তার সহকর্মীরা জানিয়েছেন, অত্যন্ত পরিশ্রমী ও নিবেদিতপ্রাণ ডা. ঝু কিছুদিন আগে অবসর নিলেও করোনা সংক্রমণ শুরুর পর তাকে আবারও কাজে ডেকেছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে এ চিকিৎসকের মৃত্যুর বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানকিভাবে কিছু বলেনি তারা।
এর আগে, গত সপ্তাহেই হাসপাতালটিতে ডা. মেই ঝংমিং নামে ৫৭ বছর বয়সী এক চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান। করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরুর দিকে এ বিষয়ে সতর্ক করা ডা. লি-ও একই বিভাগেই কাজ করতেন।
গত ডিসেম্বরে সাত ব্যক্তির শরীরে নতুন একটি ভাইরাস খুঁজে পান লি ওয়েনলিয়াং। সঙ্গে সঙ্গে তিনি সতর্ক করেছিলেন, সার্সের মতো মহামারি আকার ধারণ করতে পারে নতুন এই ভাইরাস। তখন তার সে কথায় পাত্তা দেয়নি চীনা কর্তৃপক্ষ। বরং গুজব ছড়ানোর অভিযোগে হুমকি দেয়া হয় ডা. লিকে। পরে, নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলেও কাজ চালিয়ে যান এ চিকিৎসক। এ অবস্থাতেই ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি।
হাসপাতালটিতে মারা যাওয়া চতুর্থ চিকিৎসকের নাম ডা. জিয়াং শুয়েকিং। ৫৬ বছর বয়সী এ ব্যক্তি স্তন ও থাইরয়েড গ্রন্থির রোগ বিশেষজ্ঞ ছিলেন।
চীনে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে প্রাণ হারিয়েছেন ৩ হাজার ১৩৬ জন, আক্রান্ত হয়েছেন অন্তত ৮০ হাজার ৭৫৭ জন। এর মধ্যে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
সূত্র: ডেইলি মেইল
কেএএ/এমএস