জীবাণুমুক্ত করতে ওভেনে, পুড়ে শেষ ৩৩ হাজার টাকা
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস এড়াতে মানুষের সতর্কতার যেন শেষ নেয়। তবে চীনা এক নারী সতর্ক থাকতে গিয়ে বোধহয় একটু বেশিই করে ফেললেন। জীবাণুমুক্ত করতে ওভেনে দিয়েছিলেন ৩৩ হাজার টাকা। এতে তার সব নোট পুড়ে গেছে।
চীনের জিয়াংশু প্রদেশের জিয়াংয়িন শহরে এই ঘটনা ঘটেছে।
চীনা গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য ইনডিপেনডেন্ট এক প্রতিবেদনে জানায়, চীনের সিআইটিআইসি ব্যাংকের শাখা থেকে টাকা তুলে এনেছিলেন আন্ট লি নামের এক নারী। টাকা থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আগেই সতর্ক করেছিলেন চিকিৎসকরা। তাই ৩০০ পাউন্ডের (বাংলাদেশি টাকায় ৩৩ হাজার) বেশি নোট জীবাণুমুক্ত করতে মাইক্রোওয়েভে দিয়েছিলেন তিনি। আর এটা করতে গিয়েই বড় লোকসান হয়ে যায় তার। পুড়ে যায় ওই নোটগুলো।
ওভেনে রাখার এক মিনিটের আগেই নোটগুলো পুড়ে কালো বর্ণ ধারণ করে। নম্বর দেখা যাচ্ছিল না। পরে ওই মহিলা পোড়া নোটগুলো ব্যাংকে নিয়ে যান।
তবে ব্যাংক তাকে নিরাশ করেনি। খুব নিখুঁতভাবে স্ক্রিনিং করে তার হাতে ৩০ হাজার টাকা তুলে দিতে সক্ষম হয়েছেন তারা।
এর আগে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের জীবাণু যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য ব্যাংক নোটগুলোকে উচ্চ তাপমাত্রায় ও আল্ট্রা-ভায়োলেট রশ্মি দিয়ে জীবাণুমুক্ত করার নির্দেশ দেয় দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সঙ্গে, জীবাণুমুক্ত করার পর সেগুলোকে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে (পৃথক করে রাখা) রেখে বাজারে ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
সম্প্রতি বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, মোবাইল ফোনের স্ত্রিনের মতো কঠিন পদার্থের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে করোনাভাইরাস। এমনকি এসির মাধ্যমেও এ জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়। এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৬ হাজার ১৯৫ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৬শ জনে। এছাড়া এই ভাইরাসে আক্রান্ত ৬০ হাজার ১৯০ জন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। বিশ্বব্যাপী ১০৩টি দেশ ও অঞ্চলে এই ভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে।
শুধুমাত্র চীনের মূল ভূখণ্ডেই করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৬৯৬ এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ৯৭ জনের। চীনের পর করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি দক্ষিণ কোরিয়ায়। দেশটিতে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৭ হাজার ১৩৪ এবং মৃত্যু হয়েছে ৫০ জনের।
এসআর/পিআর