সিএএ নিয়ে বিদেশিদের হস্তক্ষেপের অধিকার নেই: জাতিসংঘকে ভারত
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়, এ নিয়ে কোনও বিদেশি সংগঠনের হস্তক্ষেপের অধিকার নেই বলে জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি ভারতের সুপ্রিম কোর্টে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের এক আবেদনের প্রেক্ষিতে এ বিবৃতি দিয়েছে তারা। ওই আবেদনে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলকে সিএএ’র বিরুদ্ধে মামলায় একটি পক্ষ হিসেবে বিবেচনা করার অনুরোধ জানানো হয়েছিল।
মঙ্গলবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ভারতের সংসদের আইন প্রণয়নের সার্বভৌম অধিকার রয়েছে। কোনও বিদেশি সংগঠনের ভারতের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপের অধিকার নেই।
মন্ত্রণালয় আরও বলছে, সিএএ সাংবিধানিক ভাবে বৈধ, সাংবিধানিক মূল্যবোধের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ এবং এতে মানবাধিকারও রক্ষা করা হয়েছে।
গত ডিসেম্বরে ভারতের সংসদে পাস হয় বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন। এতে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে যাওয়া অমুসলিমদের ভারতের নাগরিকত্ব দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
ভারতে সিএএ পাস হওয়ার পরপরই এ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছিল জাতিসংঘ। সংস্থাটির মানবাধিকার কাউন্সিলের এক মুখপাত্র বলেন, ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের এই সংশোধনী ভারতীয়দের জাতীয়তাবাদে বৈষম্যমূলক প্রভাব ফেলবে। তার মতে, সব অনুপ্রবেশকারীরই সুরক্ষা, সম্মান ও মানবিক সহায়তা পাওয়ার পূর্ণ অধিকার রয়েছে।
সমালোচকদের অভিযোগ, ভারতের সিএএ বৈষম্যমূলক এবং ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তির পরিপন্থী। সিএএ ও জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) মুসলিমদের হেনস্তা করার জন্যেই করা হয়েছে।
ভারতের সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাস হওয়ার পর থেকেই দেশজুড়ে প্রতিবাদ শুরু হয়। দেশটির দিল্লি, উত্তর প্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গসহ বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভ-সংঘর্ষে বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন। সবশেষ গত ২৩ ফেব্রুয়ারি উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে সিএএ-বিরোধী ও সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়, যা পরে ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় রূপ নেয়। এতে প্রাণ হারান অন্তত ৪২ জন, আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দুই শতাধিক। এ ঘটনায় সহিংসতায় জড়িত অভিযোগ পাঁচ শতাধিক মানুষকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ।
সূত্র: এনডিটিভি
কেএএ/এমকেএইচ