ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

বিবেকানন্দকে ‘বিবে-কা-মন্নন, শচিনকে ‘সুচ্চিন’ বললেন ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ১০:২৬ এএম, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০

ভারত সফরে এসে বিতর্ক পিছু ছাড়েনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। সবচেয়ে বেশি সমালোচনা হচ্ছে তার উচ্চারণ নিয়ে। ট্রাম্প-ভাষণে স্বামী বিবেকানন্দ থেকে বেদ, শচিন থেকে শোলে-সবার উচ্চারণেই ছিল লাগাতার ভুল। এতে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, যথাযথ প্রস্তুতির অভাব! নাকি উচ্চারণে উদাসীন থাকাটা নিজে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলে ক্ষমতা জাহির করার অংশ।

ভারতের মাটিতে পা দেয়ার আগে বিমান থেকেই হিন্দিতে টুইট করছিলেন ট্রাম্প। তখনই অনেকে ধরে নিয়েছিলেন, ভারতবাসীর মন জয় করতে ট্রাম্প তার বক্তৃতাতেও নিশ্চয়ই ভারতীয় অনেক কিছুর কথাই বলবেন। তবে ভাষণে তার ভুল উচ্চারণ ভারতবাসীকে আঘাত করেছে।

দুদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে সোমবার বেলা ১১টার দিকে গুজরাটের আহমেদাবাদে পৌঁছান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে পৌঁছে বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উদ্বোধন করেন তিনি। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রথমে ভাষণ দেন নরেন্দ্র মোদি। তার বক্তব্য শেষ হলে ডায়াসের সামনে দাঁড়ান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। পুরো বক্তব্যেই তিনি প্রধানমন্ত্রী মোদির ভূয়সী প্রশংসা করেন। তবে বিপত্তি বাধে প্রেসিডেন্টের ভুল উচ্চারণ নিয়ে।

ট্রাম্প তার ভাষণে স্বামী বিবেকানন্দকে স্বরণ করতে গিয়ে বলেন ‘বিবে কা মন্নন’। হিন্দুদের ধর্মীয় গ্রন্থ বেদকে (দ্য ভেদাস) ‘ভেস্তাস’। আর পাশে বসে থাকা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বলেন ‘চিয়াওল্লাহ’ (চাওয়ালা)। একইভাবে ক্রিকেট-আইকন শচিন ট্রাম্পের মুখে হয়েছেন ‘সুচ্চিন’! ‘শোলে (হিন্দি ছবি)’-র কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেছেন ‘শোজে’।

বক্তৃতার ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই ফেসবুক-টুইটারে এই ভুল উচ্চারণ নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। মার্কিন প্রেসিডেন্ট কোন কোন শব্দের উচ্চারণ ভুল বলেছেন, সেই তালিকাও ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সঙ্গে টিপ্পনি। কেউ বলেছেন, ‘সচিনের নাম ট্রাম্প যেভাবে বললেন তাতে বোঝাই যাচ্ছে যে, তিনি ক্রিকেট কত ভালবাসেন!’ কেউ লিখেছেন, ‘দাওয়াত খেতে গিয়ে অচেনা লোকজনের সঙ্গে মিশতে গিয়ে আমার যা হয়, এসব উচ্চারণ করতে গিয়ে ট্রাম্পের অবস্থাও তেমনই হয়েছে।’ একজন লিখেছেন, ‘ভুলটাও প্যাকেজেরই মধ্যে ছিল।’

বক্তব্যে ট্রাম্পের ভুল উচ্চারণ

• স্বামী বিবে কা মন্নন (স্বামী বিবেকানন্দ)
• দ্য ভেস্তাস (দ্য ভেদাস)
• সুচ্চিন তেন্ডুলকর (শচিন টেন্ডুলকার)
• চিয়াওল্লাহ (চায়েওয়ালা)
• শোজে (শোলে)

সমালোচকরা বলছেন, এমন গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতার আগে প্রেসিডেন্টের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়া উচিত ছিল। অনেকে আবার বলেছেন, ট্রাম্প নিজের ক্ষমতার গর্বে এতটাই গর্বিত যে, উচ্চারণ ঠিক করা উচিত, তা মনেই হয়নি।

তবে একজন বিদেশির মুখে এমন ভুল উচ্চারণ কি স্বাভাবিক-এমন প্রশ্নে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ল্যাঙ্গুয়েজ ও লিঙ্গুইস্টিক্সের ডিরেক্টর অধ্যাপক সমীর কর্মকার বলেছেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের ভুল উচ্চারণ আর একজন রাষ্ট্র প্রধানের ভুল উচ্চারণকে এক পঙক্তিতে ফেলা যায় না। এখন অনেক প্রযুক্তি রয়েছে, যা থেকে খুব দ্রুত ঠিক উচ্চারণ শিখে নেয়া যায়। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা একজন সাধারণ নাগরিক ভুল করতেই পারেন। কিন্তু ট্রাম্পের মতো একজন রাষ্ট্র প্রধানের অবশ্যই উচ্চারণের ক্ষেত্রে অনেক সতর্ক হওয়া উচিত ছিল। বিশেষত তিনি যখন এমন সব ব্যক্তিত্ব, বিষয়ের কথা বলছেন, যারা একটি দেশের জনগণের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ।’

ভুল উচ্চারণ প্রকাশ্যে আসার আগে থেকেই টুইটারে অনেকে সমালোচনা করেন ট্রাম্পের। #নমস্তেট্রাম্প-এর সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ ট্রেন্ডিং ছিল #গোব্যাকট্রাম্পও। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সমালোচনায় অনেকে টেনে এনেছেন আহমেদাবাদে প্রাচীর তুলে সরকারের দারিদ্র্য আড়াল করার সিদ্ধান্তকে।

শুধু ভারতই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের অনেক নাগরিকও ছাড়েননি ট্রাম্পকে। ভারতের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে ট্রাম্প যে টুইট করেন, তাতে এক মার্কিন নাগরিক লিখেছেন, ‘আমি আগেই ভারতবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।’ আরেক জনের ব্যঙ্গোক্তি, ‘দয়া করে ওখানেই থেকে যান!’

তবে ট্রাম্পই যে শুধু ভুল উচ্চারণ করেছেন তা কিন্তু নয়, প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় ডোনাল্ড ট্রাম্প বলতে গিয়ে বলেন ডোলান। তার এ ভুল উচ্চারণও সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরপাক খাচ্ছে।

সূত্র: আনন্দবাজার

এসআর/এমএস