হংকংয়ে প্রাণঘাতী করোনায় প্রাণ গেল আরও একজনের
নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দ্বিতীয় এক ব্যক্তির প্রাণহানি ঘটেছে হংকংয়ে। ভাইরাসের সংক্রমণে বিপর্যস্ত জাপানের বন্দরে নোঙ্গর করা প্রমোদতরীতে আটকা বাসিন্দাদের ফেরত আনার পরিকল্পনার মাঝেই বুধবার হংকংয়ে দ্বিতীয় এই ব্যক্তি করোনায় প্রাণ হারালেন।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, চীনশাসিত এই নগরের প্রিন্সেস মার্গারেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন করোনা আক্রান্ত ৭০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি। বুধবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান বলে হাসপাতালের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন।
হংকংভিত্তিক ইংরেজি দৈনিক সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট বলছে, হাসপাতালের মুখপাত্র বলেছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ওই ব্যক্তির শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছিল। বুধবার সকাল ৭টার দিকে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
বুধবার আরও পরের দিকে এ ব্যাপারে হংকং স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরবে। মেডিকেলের সূত্রগুলো বলছে, মৃত ওই ব্যক্তি ডায়াবেটিস ও কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। তবে তার মৃত্যুর কারণ এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
হংকংয়ের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের প্রকাশিত আগের তথ্য বলছে, ওই ব্যক্তি কেওয়াই চুং এলাকার শেক লির (দ্বিতীয়) শেক ই হাউসে একাই বসবাস করছিলেন। গত ২ ফেব্রুয়ারি তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর ১০ দিন পর তাকে প্রিন্সেস মার্গারেট হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি তার শরীরে করোনার উপস্থিতি নিশ্চিত হন চিকিৎসকরা; তখন তার অবস্থা ছিল আশঙ্কাজনক। এর আগে, গত ২২ জানুয়ারি চীন সফর করে হংকংয়ে ফিরে আসেন ওই ব্যক্তি।
হংকংয়ে এখন পর্যন্ত ৬২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন; যাদের দু'জন মারা গেলেন। এছাড়া জাপানের বন্দরে নোঙ্গর করা প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেসে হংকংয়ের আরও ৫২ বাসিন্দার শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া গেছে। ওই প্রমোদতরীতে হংকংয়ের মোট ৩৫২ জন বাসিন্দা রয়েছেন।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে এই প্রমোদতরী। তরীটি জাপানে যাওয়ার আগে এক যাত্রীর শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। পরে ওই ব্যক্তিকে হংকংয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়।
প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের প্রাণকেন্দ্র চীনের হুবেই প্রদেশের বাইরে নতুন করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ এ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আক্রান্ত এখন এই প্রমোদতরী। সেখানকার ৫৪০ জনের বেশি যাত্রীর শরীরে করোনার সংক্রমণ ঘটেছে।
চীনের উহান থেকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে গত ৪ ফেব্রুয়ারি প্রথমবারের মতো হংকংয়ের ৩৯ বছর বয়সী এক ব্যক্তির প্রাণহানি ঘটে। ওই ব্যক্তিও ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভুগছিলেন।
বুধবার চীনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, দেশটিতে মঙ্গলবার নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন আরও এক হাজার ৭৪৯ জন এবং মারা গেছেন ১৩৬ জন। ফলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে শুধুমাত্র চীনেই মারা গেলেন ২০০৪ জন এবং চীনের বাইরে হংকংয়ে ২, তাইওয়ান ১, জাপান ১, ফ্রান্স ১ এবং ফিলিপাইন একজন করে মারা গেছেন।
এছাড়া চীনে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৭৪ হাজার ১৮৫ জন এবং চীনের বাইরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এক হাজার ১১ জন। অর্থাৎ বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এই মুহূর্তে ৭৫ হাজার ১৯৬ জনে পৌঁছেছে।
সূত্র : রয়টার্স, সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
এসআইএস/এমকেএইচ