আশঙ্কা সত্যি হলো, ওয়েস্টারডামের যাত্রী করোনা আক্রান্ত
করোনাভাইরাস আক্রান্ত যাত্রী থাকতে পারে আতঙ্কে টানা দুই সপ্তাহ ধরে সাগরে ভাসতে হয়েছে ব্রিটিশ-আমেরিকান প্রমোদতরী ওয়েস্টারডামকে। জাহাজটিকে বন্দরে ভিড়তে দিচ্ছিল না কেউই। অন্তত পাঁচটি বন্দর তাদের ফিরিয়ে দিয়েছে। অবশেষে কম্বোডিয়া তাদের নোঙ্গর করার অনুমতি দেয়। কিন্তু জাহাজটির অর্ধেক যাত্রী নামতে না নামতেই একজনের শরীরে প্রাণঘাতী সেই ভাইরাস ধরা পড়েছে।
৮৩ বছর বয়সী ওই নারী মার্কিন নাগরিক। গত শুক্রবার তিনি স্বামীসহ আরও ১৪৪ যাত্রীর সঙ্গে মালয়েশিয়া পৌঁছান। এদিন বিমানবন্দরেই তার শরীরে ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ দেখা যায়। পরে তাদের কুয়ালালামপুরের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ওই নারীর শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হয়। তবে তার স্বামীর সুস্থ আছেন। যদিও সতর্কতার কারণে তাকেও পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
১ হাজার ৪৫৫ যাত্রী ও ৮০২ ক্রু নিয়ে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে সাগরে ভাসছিল ওয়েস্টারডাম। বারবার অনুরোধ জানানোর পরেও ভাইরাস আতঙ্কে তাদের ফিরিয়ে দিয়েছে ফিলিপাইন, তাইওয়ান, জাপান, গুয়াম ও থাইল্যান্ড। অবশেষে গত বৃহস্পতিবার নিজেদের বন্দরে জাহাজটিকে নোঙ্গর করার অনুমতি দেয় দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশ কম্বোডিয়া।
দেশটির এক মুখপাত্র জানান, যাত্রীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় ধাপে ধাপে তাদের জাহাজ থেকে নামিয়ে আনা হচ্ছে। শুক্রবার জাহাজ ছেড়েছেন মোট ৪০৫ যাত্রী। সেখান থেকে তাদের বিশেষ বিমানে কম্বোডিয়ার রাজধানী নমপেন ও মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর পাঠানো হয়। আর শনিবার নেমে এসেছেন আরও অন্তত ৮৩৫ যাত্রী।
ওয়েস্টারডাম কম্বোডিয়া পৌঁছানোর আগে এর মালিক হল্যান্ড আমেরিকা লাইন বারবার দাবি করেছে, প্রমোদতরীটিতে কোনও করোনাভাইরাস আক্রান্ত আরোহী নেই। তাদের বারবার পরীক্ষা করা হয়েছে। তবে মালয়েশিয়া যাওয়ার পরপরই একজনের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ায় এর আরও যাত্রীর শরীরে ভাইরাস থাকার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
প্রমোদতরীর যাত্রীসহ মালয়েশিয়ায় করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২ জন। এর মধ্যে ১৫ জনই চীনা নাগরিক, বাকি ছয়জন মালয়েশীয়।
শনিবার ভাইরাসের উৎসস্থল চীনে নতুন করে আরও ২ হাজার ৯ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন। এতে দেশটিতে ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৮ হাজার ৫০০ জন, আর বিশ্বব্যাপী এ সংখ্যা ৬৯ হাজার ১৯৫ জন। এদিন মৃত্যুর মিছিলে সামিল হয়েছেন আরও ১৪২ জন। ফলে শুধু চীনের মূল ভূখণ্ডেই মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬৬৫ জন। এছাড়া ফিলিপাইন, হংকং, জাপান ও ফ্রান্সে একজন করে মারা গেছেন। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের তথ্য মতে, দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৯ হাজার ৪৬৫ জন করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন।
সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট
কেএএ/পিআর