চীনের তিন শহরে জ্বর-কাশির ওষুধ বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা
চীনের অন্তত তিনটি শহরে জ্বর ও কাশির ওষুধ বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। অসুস্থরা যাতে বাড়িতে ওষুধ না সেবন করে হাসপাতালে ভর্তি হন তাই এমন পদক্ষেপ। কেননা হাসপাতালে ভর্তি হলে তারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কিনা তা পরীক্ষা করা যাবে, যে ভাইরাস ইতোমধ্যে দেশটির সহস্রাধিক মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।
সিঙ্গাপুরভিত্তিক দৈনিক স্ট্রেইট টাইমসের অনলাইন প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ৭ ফেব্রুয়ারি চীনের ঝেঝিয়াং প্রদেশের রাজধানী শহর হাংঝুর খুচরা বিক্রেতা ও ফার্মেসি মালিকদের ১০৬ ধরনের ওষুধ বিক্রি বন্ধ করার নির্দেশ দেয়, যেসব ওষুধ মূলত জ্বর-কাশিসহ এ জাতীয় রোগের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়।
তালিকায় থাকা ওষুধ দেশি হোক কিংবা বিদেশি, এ জাতীয় সব ধরনের ওষুধ বিক্রি নিষিদ্ধ ওই শহরে। বিশেষ করে যেসব ওষুধে কোডিন, আইবুপ্রোফেন এবং অ্যাসপিরিনের উপাদান রয়েছে তাতে কড়াকড়ি আরও বেশি। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শি চাংগুও বলেন, করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে জরুরিভিত্তিতে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, হাংঝু শহরে ১ কোটি মানুষের বাস। এসব মানুষের কথা ভেবেই এমন নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যাতে তারা জ্বর-কাশিতে ভুগলে হাসপাতালে ভর্তি হন। এছাড়া চীনের সর্ববৃহৎ ই-কমার্স কোম্পানির আলিবাবার সহযোগী প্রতিষ্ঠান আলিহেলথসহ অনলাইনের সকল প্লাটফর্মেও এসব ওষুধ বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
স্থানীয় ওই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেছেন, করোনাভাইরাসের প্রধান দুই উপসর্গ জ্বর ও কাশি যাদের হবে তাদেরকে ফার্মেসি থেকে ওষুধ না কিনে কাছাকাছি কোনো হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। প্রাণঘাতী এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আরও দুটি লক্ষণ হলো নিউমোনিয়া হওয়া কিংবা শ্বাসকষ্টে ভোগা।
হাংঝু ছাড়াও ঝেঝিয়াং প্রদেশের নিংবো ও জিনহুয়া এবং দক্ষিণ চীনের হাইনান দ্বীপের বালমি সানায়া ও হাইকো শহরেও একই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বলে চায়না টাইম ফাইনান্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। এছাড়া গত জানুয়ারিতে থেকেই দেশটির ফার্মেসিগুলো থেকে ওষুধ কেনার ক্ষেত্রে জ্বর ও নানা কাগজপত্র দেখাতে হচ্ছে।
চীন থেকে বিশ্বের ত্রিশটির বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। সোমবার একদিনে আরও ১০৮ জন মারা যাওয়ায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১৬ জন। গত ৩১ ডিসেম্বর প্রথমবার শনাক্ত হওয়ার পর থেকে এটাই একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর নতুন রেকর্ড।
এসএ/পিআর