নাগরিকদের সিঙ্গাপুরে সফর না করার পরামর্শ কাতার-কুয়েতের
কাতারের বাসিন্দাদের অপ্রয়োজনে সিঙ্গাপুরে ভ্রমণ না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কাতারি দূতাবাস রোববার এক বিবৃতিতে এই নির্দেশনা জারি করেছে। মাত্র একদিন আগেই কুয়েতও এ ধরনের সতর্কতা জারি করেছে।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী চীনের পর করোনাভাইরাসের প্রকোপ সিঙ্গাপুরে সবচেয়ে বেশি। সে কারণেই বিভিন্ন দেশ এখন সিঙ্গাপুরে ভ্রমণের বিষয়ে নাগরিকদের সতর্ক করেছে।
কুয়েত এবং কাতারের নাগরিকদের প্রয়োজনীয় সতর্কতা মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সিঙ্গাপুরে যারা রয়েছেন তাদেরকে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে জারি করা বিভিন্ন নির্দেশনা অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।
সিঙ্গাপুরে করোনাভাইরাসের প্রকোপ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এখন পর্যন্ত সেখানে কমপক্ষে ৪৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। এদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এদিকে, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ড থেকে ভারতে আগত বিভিন্ন বিমানের যাত্রীদের বিমানবন্দরে স্ক্রিনিং করা হচ্ছে। কারো শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়লে তাকে আইসোলেশনে রাখা হবে।
মূলত চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে গত ৩১ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো নভেল করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। এরপর থেকেই চীনের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়ে এই ভাইরাস। এমনকি চীনে সফর করে অন্যান্য দেশের নাগরিকরাও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
চীনসহ বিশ্বের ২৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। চীন ছাড়া অন্যান্য দেশ ও অঞ্চলে ৩৩০ জনের বেশি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ইতোমধ্যেই অনেক দেশ তাদের নাগরিকদের চীন থেকে ফিরিয়ে নিচ্ছে। বিভিন্ন দেশ চীন সফরের ক্ষেত্রেও সতর্কতা জারি করেছে।
এদিকে, চীনে নভেল করোনাভাইরাসে শুধুমাত্র রোববারই মারা গেছে আরও ৯৭ জন, যা এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা। এ নিয়ে দেশটির মূল ভূখণ্ডেই মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯০৮ জন। এছাড়া হংকং ও ফিলিপাইনে মারা গেছেন আরও দুইজন, তারাও চীনা নাগরিক। উহানে এখন পর্যন্ত একমাত্র বিদেশি হিসেবে এক জাপানি নাগরিক মারা গেছেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরেক মার্কিনি।
অপরদিকে উহানে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা কমপক্ষে পাঁচ লাখ বলে দাবি করেছে যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন। প্রতিষ্ঠানটির গবেষকরা বলছেন, নতুন এই করোনাভাইরাসের প্রাণকেন্দ্র উহানের অনেক বাসিন্দা সংক্রমিত হলেও তারা জানেন না। ফলে আগামী দিনগুলোতে উহানে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এক কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে।
টিটিএন/এমকেএইচ