করোনাভাইরাস: ২ ঘণ্টায় মৃত্যু আরও ৬, মোট ৯১০
চীনে নভেল করোনাভাইরাসে মাত্র দুই ঘণ্টায় মারা গেছেন আরও ছয়জন। এ নিয়ে দেশটির মূল ভূখণ্ডেই মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯০৮ জন। এছাড়া নতুন ভাইরাসটিতে হংকং এবং ফিলিপাইনে প্রাণ হারিয়েছেন আরও দুইজন।
এর আগে সোমবার চীনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, প্রতিষেধকবিহীন করোনাভাইরাসে শুধুমাত্র রোববারই মারা গেছেন ৯১ জন। কিন্তু দুই ঘণ্টা পরেই তারা এর সঙ্গে আরও ছয়জনের নাম যোগ করে।
দিনের প্রথম ঘোষণা অনুসারে, ভাইরাসের উৎসস্থল হুবেই প্রদেশে রোববার নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৬১৮ জন। এ নিয়ে ওই অঞ্চলে মোট আক্রান্তর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৬৩১ জন। আর বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে।
রোববার চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানায়, করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ২০০২-০৩ সালে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া সার্সকেও (সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম) ছাড়িয়ে গেছে। সে সময় সার্স ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বের ২৪টিরও বেশি দেশে মোট ৭৭৪ জনের মৃত্যু হয়, আক্রান্ত হয় ৮ হাজার ৯৮ জন।
কোন দেশে কতজন আক্রান্ত?
এখন পর্যন্ত বিশ্বের অন্তত ২৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। চীন ছাড়া এসব দেশ ও অঞ্চলে ৩১০ জনের বেশি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
চীনের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যা সিঙ্গাপুরে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত অন্তত ৪৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে।
এ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ জন, বেলজিয়ামে একজন, কম্বোডিয়ায় একজন, কানাডায় সাতজন, ফিনল্যান্ডে একজন, ফ্রান্সে ১১ জন, জার্মানিতে ১৩ জন।
হংকংয়ে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে এবং আরও কমপক্ষে ৩৬ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিনজন, ইতালিতে তিনজন।
জাপানে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৯০ জন; এদের মধ্যে ৬৪ জনই একটি প্রমোদতরীর। তারা দেশটির সীমানায় পৌঁছানোর আগেই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জাপানের সরকারি হিসাবে তাদের নাম যুক্ত হবে না।
অপরদিকে ম্যাকাওতে ১০ জন, মালয়েশিয়ায় ১৬ জন, নেপালে একজন, রাশিয়ায় দু'জন, দক্ষিণ কোরিয়ায় ২৫ জন, স্পেনে একজন, শ্রীলঙ্কায় একজন, সুইডেনে একজন, তাইওয়ানে ১৭ জন এবং থাইল্যান্ডে ৩২ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
ফিলিপাইনে তিনজন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং সেখানে একজনের মৃত্যু হয়েছে। আরব আমিরাতে সাতজন, যুক্তরাজ্যে তিনজন, যুক্তরাষ্ট্রে ১২ জন জন এবং ভিয়েতনামে অন্তত ১৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাসের আক্রান্তের অনেক ঘটনাই হয়তো সামনে আসছে না। এ কারণে এর প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত শুক্রবার এক ব্রিটিশ বিজ্ঞানী দাবি করেছেন, সরকারি তথ্য অনুযায়ী যে সংখ্যা জানানো হচ্ছে বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা তার চেয়ে ১০ গুণ বেশি হতে পারে।
এদিকে, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের জন্য চীনে বিশেষজ্ঞ দল পাঠিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) এক টুইট বার্তায় এ তথ্য জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক টেড্রস অ্যাডহানম গ্রেব্রেইয়েসুস।
সূত্র: সিএনএন
কেএএ/টিটিএন/পিআর