করোনাভাইরাস : বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা সরকারি হিসাবের ১০ গুণ
বর্তমান বিশ্বে এখন এক আতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস। এই ভাইরাসকে যতটা খারাপ মনে করা হয়েছে এটি তার চেয়েও দশগুণ বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে বলছেন, চিকিৎসকরা খুব কম সংখ্যক মানুষের এই ভাইরাসে আক্রান্তের বিষয়টি শনাক্ত করতে পারছেন।
শুক্রবার এক ব্রিটিশ বিজ্ঞানী সতর্ক করে বলেন, সরকারি তথ্য অনুযায়ী যে সংখ্যা জানানো হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১০ গুণ বেশি হতে পারে।
বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছেই। ফলে বিভিন্ন দেশে এ নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যেই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাসের আক্রান্তের অনেক ঘটনাই হয়তো সামনে আসছে না। ফলে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনের কেন্দ্রীয় হুবেই প্রদেশে নতুন করে আরও কমপক্ষে ৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেখানে এখন পর্যন্ত ৭২২ জন মারা গেছে। গত ৩১ ডিসেম্বর হুবেই প্রদেশের উহান শহরেই প্রথম এই ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। অপরদিকে চীনের বাইরে আরও দু'জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে একজন হংকংয়ের এবং অন্যজন ফিলিপাইনের।
হুবেই প্রদেশ এবং চীনের অন্যান্য স্থানে এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজার ৫৪৬ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে বলেছেন, সীমান্ত দিয়ে এই ভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে সঠিক সংখ্যা নিশ্চিত করাও সম্ভব হচ্ছে না। শুক্রবার রাতে পাবলিক হেল্থ ইংল্যান্ড জানিয়েছে, তারা আগামী সপ্তাহ থেকে প্রতিদিন এক হাজারের বেশি মানুষের ওপর পরীক্ষা চালাবে। যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ল্যাবরেটরিতে ভাইরাস শনাক্তের জন্য পরীক্ষা করা হবে।
সম্প্রতি দেশটিতে প্রতিদিন মাত্র ১শ জনের ওপর এই পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। লন্ডন স্কুল অব হাইজন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের অধ্যাপক জন এডমান্ডস বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা যা জানা যাচ্ছে তার চেয়ে ১০ গুণ বা তারও বেশি।
তিনি বলেন, প্রথমদিকে এর লক্ষণগুলো খুব সাধারণ থাকে ফলে অনেকেই হেল্থ কেয়ারে গিয়ে পরীক্ষা করেন না। ফলে এই ভাইরাসে আক্রান্তের বিষয়টি প্রথমদিকে বোঝা যায় না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা চলছে। তবে চলতি বছরের শেষের দিক ছাড়া এ ধরনের ভাইরাসের ভ্যাকসিন সহজলভ্য হবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বর্তমানে চীনে এইচআইভির দুটি ওষুধের সমন্বয় করে করোনাভাইরাসের চিকিৎসা চালানো হচ্ছে।
টিটিএন/এমএস