২য় ধাপে চীন থেকে ৩২৩ জনকে দেশে ফেরাল ভারত
দ্বিতীয় ধাপে চীনের উহান শহর থেকে ৩২৩ জনকে দেশে ফিরিয়ে এনেছে ভারত। রোববার সকালে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইট দিল্লিতে অবতরণ করেছে। এর আগে এয়ার ইন্ডিয়ার অপর একটি বিমানে করে উহান শহরে আটকে পড়া ৩২৪ ভারতীয়কে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
ভারত ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি দেশ তাদের নাগরিকদের উহান থেকে ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে। আক্রান্ত কোনো যাত্রীর কারণে অন্য যাত্রী,পাইলট ও কেবিন ক্রুরা যাতে ভাইরাসটি সংক্রমিত হওয়ার উচ্চ ঝুঁকিতে না পড়েন এর জন্য বিশেষজ্ঞা চিকিৎসকের মাধ্যমে চীনের উহান থেকে দেশে ফিরিয়ে আনাদের নানাভাবে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে।
এদিকে, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা তিনশ ছাড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত ৩০৪ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। বিভিন্ন দেশে এই ভাইরাসে ১৪ হাজার ৫শ ৫১ জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। অপরদিকে, চীনের বাইরে ফিলিপাইনে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
অনেক দেশই এই ভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে চীন থেকে আগতদের ওপর অন অ্যারাইভাল ভিসা বন্ধ করে দিচ্ছে। নিউ ইয়র্কে এক ব্যক্তি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন কীনা তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।
অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যে প্রথমবারের মতো একজনের করোনাভাইরাসে আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। প্রথমবারের মতো স্পেনেও একজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ২৭টির মতো দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এই প্রাণঘাতী ভাইরাস। ভারতের কেরালা রাজ্যে দু'জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
চীনের উহান শহর থেকে স্থানীয় সময় মধ্যরাত ৩টা ১০ মিনিটে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিশেষ বিমান ভারতীয় নাগরিকদের নিয়ে যাত্রা শুরু করে। বিমানটি রোববার সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে দিল্লি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে।
ওই একই বিমানে করে মালদ্বীপের সাত নাগরিককেও ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এর আগে এয়ার ইন্ডিয়ার প্রথম ফ্লাইটে ফিরিয়ে আনা ৩২৪ ভারতীয় নাগরিকের মধ্যে ২১১ জনই ছিল শিক্ষার্থী। তবে চার ভারতীয়র শরীরের তাপমাত্রা খুব বেশি থাকায় তারা বিমানের দ্বিতীয় ফ্লাইটে করে দেশে ফিরতে পারেননি। প্রথম ফ্লাইটেও একই ঘটনার কারণে ছয় ভারতীয় দেশে ফিরতে পারেননি।
করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ কী?
এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে শুরুতে জ্বর ও শুষ্ক কাশি হতে পারে। এর সপ্তাহখানেক পর শ্বাসকষ্টও দেখা দেয়। অনেক সময় নিউমোনিয়াও হতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে রোগীর অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা লাগে। তবে এসব লক্ষণ মূলত রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরই জানা গেছে।
সেক্ষেত্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার একদম প্রাথমিক লক্ষণ কী বা আদৌ তা বোঝা যায় কি-না তা এখনও অজানা। তবে নতুন এই করোনাভাইরাস যথেষ্ট বিপজ্জনক। সাধারণ ঠান্ডা-জ্বরের লক্ষণ থেকে এটি মৃত্যুর দুয়ার পর্যন্তও নিয়ে যেতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ভাইরাসের নাম দিয়েছে ২০১৯ নভেল করোনাভাইরাস। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিরা সবাই চীনের নাগরিক। অপরদিকে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে ২৯৪ জনই হুবেই প্রদেশের বাসিন্দা। শুধুমাত্র শনিবারই হুবেই প্রদেশে আরও ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
অপরদিকে, চীনে নতুন করে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে আরও দুই হাজার ৫৯০ জন। শুধুমাত্র চীনেই এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ হাজার ৩৮০। অপরদিকে চীনের বাইরে প্রায় ১শ জনের এই ভাইরাসে আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে।
টিটিএন/জেআইএম