করোনাভাইরাসের আঘাত তেলের দামে
করোনাভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। মঙ্গলবার টানা ষষ্ঠ দিনের মতো দরপতন হয়েছে তেলের বাজারে। এর একদিন আগেই সোমবার অপরিশোধিত তেলের দাম দাঁড়িয়েছিল গত তিনমাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, সোমবার ব্রেন্ট ক্রুড এলসিওসি১-এর দাম নেমেছিল প্রতি ব্যারেল ৫৮ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলারে। মঙ্গলবার তা কমেছে আরও ০.৬ শতাংশ। আর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) সিএলসি১-এর দর দাঁড়িয়েছে ৫২ দশমিক ৮৫ ডলার, যা গত অক্টোবরের পর সর্বনিম্ন।
চীনে দ্রুতগতিতে ছড়াচ্ছে করোনাভাইরাস। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। এখন পর্যন্ত দেশটিতে ১০৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটিতে নতুন করে এক হাজার ৩০০ জনসহ মোট চার হাজার ৫১৫ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। অন্যান্য দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে অন্তত ৪৪টি।
যুক্তরাষ্ট্রে এই ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ার পর চীনসহ আক্রান্ত দেশগুলো ভ্রমণ না করার নির্দেশনা দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাসহ বিভিন্ন বিধিনিষেধের ঘটনায় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে বড় প্রভাব পড়বে বলে ধারণা বিনিয়োগকারীদের। এতে যথেষ্ট মজুত ও সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও অপরিশোধিত তেলের বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
ব্রিটেনের বহুজাতিক ব্যাংক বারক্লেস জানিয়েছে, তাদের দেয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী- ২০২০ সালে প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ৬২ ডলার ও ডব্লিউটিআইয়ের দাম ৫৭ ডলারের চেয়ে আরও দুই ডলার কমে যেতে পারে।
চলতি বছরের প্রথমভাগে তেলের চাহিদা প্রতিদিন ছয় থেকে আট লাখ ব্যারেল হতে পারে বলে আভাস দিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। ভাইরাস আতঙ্কের কারণে এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলে সেক্ষেত্রে ওপেকের কাছে সহযোগিতা চেয়েছে বারক্লেস।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর থেকে তেল রফতানিকারক দেশেগুলোর জোট ওপেকের তেমন ভূমিকা চোখে পড়েনি। তবে সোমবার সংগঠনটির নেতৃস্থানীয় দেশ সৌদি আরব জানিয়েছে, দরকার হলে যেকোনো বিষয়ে সাড়া দেবে ওপেক।
ওপেকের সঙ্গে রাশিয়া যুক্ত হওয়ার পর তা ওপেক প্লাস নামে পরিচিতি পায়। সংগঠনটি তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে গত তিন বছর ধরেই সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। আগামী মার্চ পর্যন্ত প্রতিদিন পাঁচ লাখ থেকে ১৭ লাখ ব্যারেল পর্যন্ত তেল আটকে রাখার বিষয়েও সম্মত হয়েছে তারা। তবে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে অপরিশোধিত তেলের মজুত বেড়েছে।
কেএএ/এসআইএস/জেআইএম