করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা প্রবল হচ্ছে : চীন
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ক্ষমতা আরও প্রবল হচ্ছে এবং সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন। রোববার এক সতর্কবার্তায় প্রাণঘাতী এই করোনাভাইরাসে চীনে এখন পর্যন্ত ৫৬ জনের প্রাণহানি এবং বিশ্বজুড়ে ২ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানানো হয়।
দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন মন্ত্রী মা জিয়াওয়ে এক সংবা সম্মেলনে বলেছেন, নতুন এই ভাইরাসের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের ধারণা সীমিত এবং এই ভাইরাসের কারণে উদ্ভূত ঝুঁকি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণাও নেই।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার ১ থেকে ১৪ দিন পর এর প্রথম লক্ষণ প্রকাশ হতে পারে। ইনকিউবেশনের সময় এই ভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে; যা এর আগে একই ধরনের আরেক প্রাণঘাতী ভাইরাস সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোমে (সার্স) দেখা যেতো না।
২০০২ থেকে ২০০৩ সালের দিকে চীনে সার্স ভাইরাসের ব্যাপক প্রকোপ দেখা দেয়। এতে অন্তত ৭৭৪ জনের প্রাণহানি ঘটে। এছাড়া এই ভাইরাসে আক্রান্ত হন ৮ হাজারের বেশি মানুষ।
দেশটিতে নতুন চান্দ্রবর্ষের দ্বিতীয় দিন রোববার জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী মা জিয়াওয়ে বলেন, ভাইরাস সংক্রমণের লাগাম টানতে এখন পর্যন্ত পরিবহন ও ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি বড় ধরনের অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। তবে এই প্রচেষ্টা আরও জোরাল করা হবে।
চীনে এই ভাইরাসে এখন পর্যন্ত ৫৬ জনের মৃত্যু ও আরও ২ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং শনিবার দেশটির জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে এই ভাইরাস দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। একই সঙ্গে তার দেশ ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহানের এই ভাইরাস এখনও মহামারি আকার ধারণ না করলেও ইতোমধ্যে থাইল্যান্ড, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর ও সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ভারত, নেপালে পৌঁছেছে।
এদিকে, মার্কিন একদল বিজ্ঞানী বলেছেন, তারা নতুন এক ধরনের করোনাভাইরাস বিশ্বে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে তিন মাস আগে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। একই সঙ্গে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে সাড়ে ছয় কোটি মানুষের প্রাণহানি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তারা।
করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ কী?
করোনাভাইরাস আক্রান্ত হলে গরু-ছাগল জাতীয় পশুর ডায়রিয়া, পাখিদের শ্বাসকষ্টজনিত রোগ হতে পারে। মানুষের ক্ষেত্রে প্রধান লক্ষণ জ্বর, শুষ্ক কাশি ও শ্বাসকষ্ট। সেখান থেকে নিউমোনিয়াও হতে পারে। প্রাথমিকভাবে লক্ষণগুলো ততটা গুরুতর মনে না হলেও শেষ পর্যন্ত প্রাণঘাতী হতে পারে।
বাাঁচার উপায়
নতুন ভাইরাসটির এখনও কোনও প্রতিষেধক আবিষ্কৃত হয়নি। এ কারণে এর ছড়িয়ে পড়া থামানোর একমাত্র উপায় হচ্ছে, আক্রান্তদের আবদ্ধ জায়গায় রেখে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও পরীক্ষা করা। যারা আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসছেন তাদের পর্যবেক্ষণ করা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে কাজে আসতে পারে। এছাড়া গণজমায়েতে নিষেধাজ্ঞাও জারি করা যেতে পারে।
সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি।
এসআইএস/এমকেএইচ