চীন ভ্রমণে সতর্কতা, করোনাভাইরাসে অস্ট্রেলিয়ায় আক্রান্ত ১
অস্ট্রেলিয়ায় প্রথমবারের মতো একজনের করোনাভাইরাসে আক্রান্তের খবর নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ। ওই ব্যক্তি ভিক্টোরিয়া অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা। শনিবার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এটাই দেশটিতে প্রথমবারের মতো এই ভাইরাসে আক্রান্তের ঘটনা।
এদিকে, লোকজনকে চীনের হুবেই প্রদেশে সফর না করার পরামর্শ দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া কর্তৃপক্ষ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। হুবেই প্রদেশের উহান এবং অন্যান্য শহরে ভ্রমণ না করার জন্য কঠোর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
গত ডিসেম্বরের শেষের দিকে হুবেই প্রদেশের রাজধানী শহর উহানে প্রথম ফ্লু টাইপের এই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে। ওই শহরের পর ভাইরাসটি রাজধানী বেইজিংসহ অন্যান্য প্রদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে।
এছাড়া চীনের প্রতিবেশী জাপান, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, ম্যাকাও এবং যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়াতেও এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এখন ইউরোপে এবং এশিয়াতেও ছড়িয়ে পড়ছে এই ভাইরাস। অপরদিকে ফ্রান্সে তিনজনের এই ভাইরাসে আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
শুক্রবার রাতে ফ্রান্সের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, বোরডেক্সে প্রথম একজন এবং প্যারিসে দু'জনের এই ভাইরাসে আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। চীনে করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত এক হাজার ২৮৭ জন আক্রান্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এদের মধ্যে ৪১ জনই মারা গেছেন।
এদিকে, ভিক্টোরিয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি চীনা নাগরিক, বয়স ৫০ বছর। তিনি উহান শহরে ছিলেন। সম্প্রতি সেখান থেকে অস্ট্রেলিয়ায় এসেছেন। মেলবোর্নের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধান ওই ব্যক্তির অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
ভিক্টোরিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেনি মিকাকোস সাংবাদিকদের বলেন, এটা জোর দিয়ে বলা গুরুত্বপূর্ণ যে, এখনই শঙ্কা প্রকাশ করার কোনো কারণ নেই। অপরদিকে, ভিক্টোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অ্যাঙ্গি বোন বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিকে নিবির পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে রাখা হয়নি। তার অবস্থা স্থিতিশীল এবং খুব গুরুতর অবস্থা নয়।
চীনে করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত এক হাজার ২৮৭ জন আক্রান্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এদের মধ্যে ৪১ জনই মারা গেছেন। ভারতের চার শহরে ১১ জনের দেহে করোনাভাইরাসের লক্ষণ শনাক্ত করা গেছে। তাদেরকে হাসপাতালের সম্পূর্ণ আলাদা ওয়ার্ডে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। সম্প্রতি ওই ব্যক্তিরা চীন থেকে দেশে ফিরেছেন।
এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণগুলো হলো জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে এই ভাইরাসের কারণে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কারণ এই ভাইরাস অনেকটাই সেভার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম বা সার্সের মতো। ২০০২ এবং ২০০৩ সালে সার্সের কারণে শত শত মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
এদিকে, মালেয়েশিয়াতেও এই ভাইরাস শনাক্ত করা গেছে। অন্তত তিনজনের শরীরে এই ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী জুলকিফল আহমাদ। এখনও পর্যন্ত এই ভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক পাওয়া যায়নি। যার ফলে আতঙ্ক আরও বাড়ছে।
টিটিএন/জেআইএম