শ্রীলঙ্কায় ‘বাইরের প্রভাব’ মানা হবে না : চীন
চীন সবসময় শ্রীলঙ্কার সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল তবে দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ‘বাইরের কোনো প্রভাব’ সেখানে মেনে নেয়া হবে না। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়া শি মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কা সফরে দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে ও তার ভাই এবং প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের সঙ্গে বৈঠকের পর এমন কথা বলেছেন।
শ্রীলঙ্কার বর্তমান দুই নেতার সঙ্গে পৃথকভাবে গতকাল সাক্ষাৎ করেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের কার্যালয় থেকে দেয়া বিবৃতি অনুযায়ী চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্টেট কাউন্সিলর ওয়াং শি বলেন, ‘কৌশলগত অংশীদার হিসেবে শ্রীলঙ্কার স্বার্থে কাজ করার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন হচ্ছে এবং হবে।’
শ্রীলঙ্কার কথা উল্লেখ করে ওয়াং শি আরও বলেন, ‘দেশটির সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং স্বাধীনতার পক্ষে দাঁড়িয়েছে চীন। আমরা দেশটিতে বাইরের যেকোনো প্রভাব মেনে নেব না। মূলত শ্রীলঙ্কার যেসব অভ্যন্তরীণ বিষয়ে উদ্বেগ রয়েছে সে সম্পর্কিত বিষয়ে বাইরের কাউকে হস্তক্ষেপ করতে দেব না।’
লঙ্কান প্রেসিডেন্ট ওয়াং শিকে বলেছেন, শ্রীলঙ্কা অনেক রাজনৈতিক সংকটের মুখোমুখি এবং এই সংকট থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হওয়া। এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেন, ‘অর্থনৈতিক স্বাধীনতাই রাজনৈতিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করবে।’
চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত দৈনিক শিনহুয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী গোতাবায়া রাজাপাকসে বলেছেন, শ্রীলঙ্কা-চীন সম্পর্কের উন্নয়ন, উভয় পক্ষের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং আঞ্চলিক শিপিং রুট ও লজিস্টিক হাব হিসেবে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ প্রকল্প বাস্তবায়নে যৌথভাবে কাজ করতে তার দেশ সবসময় প্রস্তুত।
প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে বলেছেন, বন্দর নগরী কলম্বো এবং হাম্বানটোটা বন্দরের মতো প্রধান প্রকল্পগুলোর উন্নয়নে শ্রীলঙ্কার সরকার সম্পূর্ণ সমর্থন দেবে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, এসব প্রকল্প শুধু দেশের অর্থনীতিকে উন্নত করবে না একইসঙ্গে মানুষের জীবনমানের উন্নয়নে কাজ করবে।
এর প্রতিক্রিয়ায় চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অতীতের মতো শ্রীলঙ্কার সমৃদ্ধি ও প্রবৃদ্ধিতে দীর্ঘদিনের মিত্র হবে চীন। তিনি উল্লেখ করেন, কলম্বো নিয়ে চীন তার নীতিতে সবসময় অটল। আর এর মাধ্যতে তার দেশ দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে কাজ করে যাবে।
মাইথ্রিপালা সিরিসেনার সরকার ২০১৭ সালে হাম্বানটোটা বন্দর ৯৯ বছরের জন্য চীনকে ইজারা দিয়েছিল। গোতাবায়া এর আগে বলেন, ‘এই চুক্তি নিয়ে নতুন করে আলোচনা করতে হবে। বিনিয়োগের জন্য ক্ষুদ্র অঙ্কের ঋণের বদলে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক পোতাশ্রয় দেওয়া গ্রহণযোগ্য নয়। এটা আমাদের নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত ছিল।’
এসএ/এমকেএইচ