গণতন্ত্রের জোরাল দাবিতে হংকংয়ের নির্বাচনে রেকর্ড ভোট
গণতন্ত্রের জোরালো দাবির মুখে কয়েক মাসের টানা বিক্ষোভ সহিংসতার মাঝে চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হংকংয়ের জেলা পরিষদ নির্বাচনে রেকর্ড সংখ্যক ভোট পড়েছে। গত ছয় মাসের সরকারবিরোধী বিক্ষোভ-সহিংসতায় অবরুদ্ধ চীনপন্থী হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি লামের জন্য এই নির্বাচনকে এক ধরনের মাপকাঠি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
রোববার স্থানীয় সময় সকালে হংকংয়ের জেলা পরিষদ নির্বাচনে ব্যাপক সংখ্যক ভোটারের উপস্থিতি দেখা গেছে বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
সরকারি তথ্য-উপাত্ত বলছে, স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টার মধ্যেই প্রায় ১৫ লাখ ২৪ হাজার ৬৭৫ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। স্থানীয় এই নির্বাচনে আরও ৯ ঘণ্টা ভোটকেন্দ্র খোলা থাকবে।
চার বছর আগে জেলা পরিষদ নির্বাচনে একই সময়ে ভোট পড়েছিল প্রায় ১৪ লাখ ৬৭ হাজার ২২৯টি। অতীতের এই রেকর্ড এবার ভেস্তে গেছে ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত ভোটদানের মাধ্যমে। রোববার মধ্যরাতের দিকে স্থানীয় এই নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল ঘোষণা সম্ভাবনা রয়েছে।
চীনের বিতর্কিত প্রত্যর্পণ বিলের বিরোধীতা করে গত ছয় মাস আগে হংকংয়ের হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভ-সহিংসতা থেকে চীনপন্থী রাজনৈতিক নেতাদের ওপর হামলাও হয়। গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার দাবিতে হংকংয়ের বাসিন্দাদের তীব্র এই আন্দোলনের মুখে বিতর্কিত ওই বিল প্রত্যাহার করে নেয়া হলেও বিক্ষোভকারীরা থেকে যান রাস্তায়।
গত কয়েক মাসের এই বিক্ষোভ থেকে আবারও সহিংসতা দেখা দিলে নির্বাচন যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেয়া হতে পারে বলে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। তবে রোববার হংকংয়ের রাস্তায় খুব কম সংখ্যক বিক্ষোভকারীকে দেখা গেছে। বিক্ষোভের আশঙ্কায় দাঙ্গা পুলিশের সদস্যরা ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে।
টেলিভিশন ক্যামেরার সামনে নিজের ভোটারধিকার ব্যালটে প্রয়োগ করেছেন বেইজিং সমর্থিত হংকংয়ের নেতা ক্যারি লাম। তিনি বলেছেন, জেলা নির্বাচনে মানুষের মতামতকে তার সরকার গুরুত্ব দিয়ে দেখবে।
জেলা পরিষদের এই নির্বাচনে ৪৫২টি আসনের বিপরীতে লড়াই করছেন রেকর্ড এক হাজার ১০৪ জন প্রার্থী। নিবন্ধিত ভোটার রয়েছেন প্রায় ৪১ লাখ। হংকংয়ের গণতন্ত্রকামী রাজনীতিকরা যদি নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পান, তাহলে হংকংয়ের পার্লামেন্টের ছয়টি আসন তাদের নিয়ন্ত্রণে আসবে। একই সঙ্গে বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী নির্বাচনের জন্য সংসদের ১ হাজার ২০০ সদস্যের যে প্যানেল রয়েছে; সেই প্যানেলের ১১৭টি আসন তারা পাবেন।
এসআইএস/পিআর