ব্যাগে প্রেমিকার কাটা হাতসহ অধ্যাপক আটক
রাশিয়ার নামকরা এক ইতিহাসের অধ্যাপক স্বীকার করেছেন তিনি তার সাবেক শিক্ষার্থী ও প্রেমিকাকে হত্যা করে তার বিভিন্ন অঙ্গ মরদেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করেছেন। তারপর মৃত প্রেমিকার দুটি হাত ব্যাগ নিয়ে ঘুরছিলেন। গত শনিবার তাকে আটক করা হয়।
ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের এক অনলাইন প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, অধ্যাপকের এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড নিয়ে পুরো রাশিয়ার শোকের মাতম তৈরি হয়েছে। ৬৩ বছর বয়সী ওই অধ্যাপকের নাম ওলেগ সোকোলোভ। তাকে সম্প্রতি মদ্যপ অবস্থায় একটি নদী থেকে আটক করা হয়।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ও দেশটির পুলিশের বরাতে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, পিটার্সবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই অধ্যাপক মদ্যপ অবস্থায় নদীতে পড়ে ছিলেন। প্রেমিকাকে হত্যার পর মদ্যপ অবস্থায় তার লাশ টুকরো করে নদীতে ফেলতে গিয়েই তিনি নদীতে পড়ে যান বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঘটনা গত শনিবারের। ময়কা নামক নদীতে পড়ে থাকতে দেখে অধ্যাপককে উদ্ধার করে পুলিশ। তার সঙ্গে থাকা ব্যাকপ্যাকে দুইটি কাটা হাত পাওয়া যায়। পরে পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে অধ্যাপকের বাড়ি থেকে নারীর মরদেহ উদ্ধার করে। মরদেহটি ২৪ বছর বয়সী অধ্যাপকের প্রেমিকা আনাস্তাসিয়া ইয়াশচেঙ্কের।
নদী থেকে উদ্ধারের পর অধ্যাপক সোকোলোভকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পানিতে অনেক্ষণ থাকায় তিনি মারাত্মক হাইপোথারমিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। গত রোববার থেকে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি তার প্রেমিকাকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।
ইতিহাসের অধ্যাপক সোকোলোভ একজন নেপোলিয়ান বিশেষজ্ঞ হিসাবে সুপরিচিত। নেপোলিয়ানকে নিয়ে বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন তিনি। এজন্য ফ্রান্স সরকার ২০০৩ সালে তাকে ‘লেজিওন অব হনার’ পুরস্কারে ভূষিত করে। কয়েকটি চলচ্চিত্রে ইতিহাসবিদের চরিত্রে অভিনয়ও করেছেন তিনি।
প্রেমিকা আনাস্তাসিয়ার সঙ্গে বেশ কিছু কাজ করেছেন অধ্যাপক। তারা একসঙ্গে ফরাসি ইতিহাস পড়তেন। সোকোলোভের ছাত্র-ছাত্রীরা তাকে একজন অত্যন্ত দক্ষ অধ্যাপক বলে বর্ণনা করেছেন, তিনি ফরাসি ভাষায় অনর্গল কথা বলতে পারতেন। একইসঙ্গে তার মধ্যে নেপোলিয়ানকে নিয়ে রীতিমত পাগলামী ছিল।
অধ্যাপক জবানবন্দিতে বলেছেন, প্রেমিকার সঙ্গে ঝগড়ার এক পর্যায়ে উত্তেজিত হলে তিনি তাকে হত্যা করেন। তারপর মরদেহ থেকে একে একে মাথা, হাত ও পা বিচ্ছিন্ন করেন। পুলিশ বলছে, তিনি মরদেহ গুম করে তারপর নেপোলিয়ানের মত পোশাক পরে জনসম্মুখে আত্মহত্যা করার পরিকল্পনা করেছিলেন।
দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঘাতক ওই অধ্যাপক যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক সেখানকার ছাত্র ছিলেন। অধ্যাপকের আইনজীবী বলেছেন, ‘আমার মক্কেল তার দোষ স্বীকার করেছেন। তিনি উত্তেজিত হয়ে এম কাজ করায় অনুতপ্ত। পুলিশকে সব ধরনের সহযোগিতা করছেন তিনি।’
এসএ/এমকেএইচ