ভারতে বেকারত্বের রেকর্ড
ভারতে হু হু করে বাড়ছে বেকারত্ব। গত অক্টোবর মাসে দেশটির এই বেকারত্বের হার আগের তিন বছরের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। শুক্রবার (১ নভেম্বর) সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি নামের একটি সংস্থা তাদের রিপোর্টে এমনটাই দাবি করেছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, এ বছর অক্টোবর মাসে দেশে বেকারত্বের হার ৮.৫ শতাংশ। যা গত তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসের পর এত খারাপ অবস্থা হয়নি। এমনকি নোট বাতিলের পরও বেকারত্ব এই জায়গায় পৌঁছায়নি। উৎসবের মাসেই (অক্টোবর মাসেই দেশটিতে সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা পালিত হয়েছে) কাজ হারিয়েছেন বহু মানুষ।
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, বাজারে আর্থিক মন্দার কারণেই এই বেকার সমস্যা প্রকট হচ্ছে। মূলত, জিএসটি ও নোট বাতিলের জেরে অসংগঠিত ক্ষেত্রে যে বিশাল ক্ষতি হয়েছে, তার প্রভাব ধীরে ধীরে পড়তে শুরু করেছে। সাধারণ মানুষের হাতে নগদ অর্থের জোগান নেই, ফলে বাজারে চাহিদা নেই। আর চাহিদা কমে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই উৎপাদন কমাতে হচ্ছে বড় বড় সংস্থাকে। ফলে চাকরি যাচ্ছে সাধারণ মানুষদের। একই সঙ্গে মার খাচ্ছে ছোট দোকানদাররাও। এমন গভীর সমস্যার সমাধানে সরকারের ভূমিকা নগন্য। প্রকৃত অর্থে কোনো উদ্যোগই নেয়া হয়নি। উল্টো শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীরা সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছেন আর্থিক মন্দার তত্ত্বকে অস্বীকার করতে।
অন্যদিকে ‘সেন্টার ফর সাস্টেনেবল এমপ্লয়মেন্ট’ শিরোনামে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন সন্তোষ মেরহোত্রা ও যজাতি কে পারিদা নামের দুই নামী অর্থনীতিবিদ। তাদের দাবি, ২০১১-১২ অর্থবছর থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত ভারতবর্ষে ইনকামের সুযোগ কমেছে প্রায় ৯০ লাখ মানুষের। ইউপিএ (সংযুক্ত প্রগতিশীল মোর্চা) সরকারের আমলের শেষ ৩ বছর এবং মোদি সরকারের প্রথম ৪ বছর এর জন্য সমানভাবে দায়ী।
শুধু তাই নয়, গত ৩ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে মানুষের আয়ের সুযোগ কমছে বলেও ওই গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে। অন্যান্য অর্থনীতিবিদরা বলছেন, যেভাবে মানুষ চাকরি হারাচ্ছেন তাতে অর্থনীতির মোড় ঘোরানো আরও কঠিন হয়ে যাবে।
এমবিআর