কাতারে শুধু স্ট্রোক করেই শত শত প্রবাসী শ্রমিকের মৃত্যু
মধ্যপ্রাচ্যের সমৃদ্ধ অর্থনীতির দেশ কাতারে কর্মরত শত শত প্রবাসী শ্রমিক হিটস্ট্রোকে মারা যাচ্ছেন। গত কয়েক বছরে দেশটিতে বিদেশি শ্রমিক মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানের পর এমন তথ্য জানা গেছে। ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
২০২২ ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনে স্টেডিয়ামসহ নির্মাণ খাতে চাপ বেড়েছে কাতারে। স্টেডিয়াম, সড়ক-মহাসড়ক, ও বিলাসবহুল হোটেল নির্মাণের জন্য সম্প্রতি ১৯ লাখ বিদেশি শ্রমিক নিয়েছে কাতার। যাদের অধিকাংশই বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানে ও নেপাল থেকে যাওয়া।
প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, চলতি গ্রীষ্মকালেই সর্বোচ্চ ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় প্রতিদিন টানা ১০ ঘণ্টা করে কাজ করেছেন এসব বিদেশি শ্রমিক। তাদের থাকার ব্যবস্থাও নির্মাণাধীন এসব স্থাপনার ভেতরে। নির্মাণাধীন ভবনের ভেতের থাকার কারণেও অনেকে মৃত্যু হয়েছে।
২০০৯ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত গত ৮ বছরে কাতারে যে ১৩শ নেপালি শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে তার কারণ বিশ্লেষণ করেছেন একদল আবহাওয়াবিদ ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ। সম্প্রতি কার্ডিওলজি জার্নাল নামের এক সাময়িকীতে যা প্রকাশ পায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, হিটস্ট্রোক বা তীব্র গরমে অসুস্থতাজনিত কারণে এসব শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। গবেষকদের মতে, যে মাসগুলোতে তুলনামূলকভাবে কম গরম পড়েছে সে মাসগুলোতে ২২ শতাংশ মৃত্যু হয়েছে। গ্রীষ্মকালে এই হার বেড়ে ৫৮ শতাংশে পৌঁছায়। মূলত হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই তাদের মৃত্যু হয়।
নরওয়ের অসলো মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হৃদরোগ বিভাগের অধ্যাপক ডা. ড্যান অ্যাটার বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় এটা স্পষ্ট যে, দেশ থেকে শ্রমিকরা সুস্থ্য অবস্থায় আসে। তরুণদের হৃদরোগে আক্রান্তের হার একেবারে কম হলেও কাতারে হাজার শ্রমিক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে আমি স্পষ্ট করে এটা বলতে চাই এসব মৃত্যুর কারণ হিটস্ট্রোক। তারা যে দাবদাহের মধ্যে কাজ করে তা তাদের শরীর সহ্য করতে পারে না। মূলত এ কারণেই এসব প্রাণহানি ঘটছে।
এসএ/এমকেএইচ