তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য, মধুচক্রে জড়িত ১০ মন্ত্রী
প্রথমে কলেজ ছাত্রীদের এনজিওতে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ফাঁদে ফেলা হতো। চাকরিতে রাজি হলে রাজনৈতিক নেতা, আমলাদের কাছে তাদের পাঠিয়ে ঘনিষ্ঠদৃশ্যের ভিডিও ক্লিপ বানানো হয়। পরে ওই ভিডিও ক্লিপ দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে চলতো কোটি কোটি টাকার চাঁদাবাজি।
ভারতের মধ্যপ্রদেশে চাঞ্চল্যকর একটি যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনার তদন্তে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে। দেশটির সংবাদমাধ্যম জিনিউজ বলছে, এনজিওর নামে তরুণীদের দিয়ে এমন রমরমা দেহ ব্যবসা চক্রের সঙ্গে দেশটির সাবেক দশজন মন্ত্রী জড়িত। তবে এই মন্ত্রীদের নাম প্রকাশ করেননি তদন্ত কর্মকর্তারা।
জিনিউজ বলছে, তদন্ত যত গভীর হচ্ছে, একের পর এক নেতা-মন্ত্রীর নাম বেরিয়ে আসছে। মধ্যপ্রদেশে যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনা তদন্তে এখন পর্যন্ত ১০ সাবেক মন্ত্রীর নাম উঠে এসেছে। এই তালিকায় রয়েছে এক ডজন সরকারি উচ্চ পর্যায়ের আমলাও।
যে রাজনৈতিক নেতাদের নাম তদন্তে উঠে এসেছে তাদের অধিকাংশই ভারতের ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন সরকারের। এই মধুচক্রকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপি।
মধ্যপ্রদেশের যৌন কেলেঙ্কারির এ ঘটনা তদন্তে গঠিত বিশেষ তদন্ত দলের প্রধান সঞ্জীব শামী বলেছেন, যৌন কেলেঙ্কারির এ ঘটনায় কংগ্রেস-বিজেপি দুই দলের নেতারা যুক্ত রয়েছেন। যে সব ভিডিও ক্লিপ উদ্ধার করা হয়েছে, তাতে এই নেতাদের স্পষ্ট দেখা গেছে।
এর আগে বুধবার অভিযান চালিয়ে মধ্যপ্রদেশ থেকে ৫ নারীকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশ। এর মধ্যে একজন রয়েছেন কংগ্রেসের আইটি সেলের এক নেতার স্ত্রী। পুলিশ বলছে, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে একজন নারী এনজিওর নামে মধুচক্র চালাতেন। বিজেপি বিধায়ক ব্রিজেন্দ্র প্রতাপ সিংয়ের বাড়িতে ভাড়া নিয়ে এই মধুচক্র তিনি চালাতেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মধ্যপ্রদেশ পুলিশের দাবি, প্রত্যেক নারীরই নিজস্ব গ্যাং রয়েছে। যেখানে কলেজ ছাত্রীদের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ফাঁদে ফেলা হতো। রাজনৈতিক নেতা, আমলাদের কাছে তাদের পাঠিয়ে ভিডিও ক্লিপ ধারণ করা হয়। এমন অন্তত এক হাজার ভিডিও ক্লিপ তাদের কাছে থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। পরে ওই ভিডিও দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে চাঁদা আদায় করতো এই চক্র।
সম্প্রতি একটি ঘনিষ্ঠ দৃশ্যের ভিডিও দেখিয়ে এক আইএস কর্মকর্তার কাছে ২ কোটি টাকা দাবি করে এই চক্র। ইনডোরে পৌরসভার এক কর্মকর্তাকে ফাঁদে ফেলে ৩ কোটি টাকা চাঁদা আদায় করে তারা। এরপরই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই কর্মকর্তা।
তার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে ওই মধ্যচক্রের নারী সদস্যদের গ্রেফতার করা হয়। মধ্যপ্রদেশের এই মধচক্রকে ভারতের সবচেয়ে বড় যৌন কেলেঙ্কারি বলে দাবি করছে পুলিশ। বিজেপি ও কংগ্রেসের সাবেক ১০ মন্ত্রী এই চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছে পুলিশ। চক্রের সদস্যদের আশ্রয় দেয়ার অভিযোগ রয়েছে এই মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে।
এসআইএস/এমকেএইচ