সুপ্রিম কোর্টের রায়কে ভুল বললেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী
পার্লামেন্ট স্থগিত করার সিদ্ধান্ত বেআইনি বলে যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছিলেন সেই রায়কে ভুল বলেছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা আছে জানিয়ে তিনি বলেছেন, দেশের এমন জাতীয় বিতর্কিত রাজনৈতিক একটি বিষয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ করা ঠিক হয়নি।
গত মঙ্গলবার দেশটির সুপ্রিম কোর্ট এক ঐতিহাসিক রায়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী অধিবেশন স্থগিত করে পার্লামেন্টকে তার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনে বিরত রাখার চেষ্টা করে আইন ভেঙেছেন। প্রথমবারের মতো সুপ্রিম কোর্ট প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে রায় দিলে গতকাল ব্রিটিশ পার্লামেন্টের অধিবেশন ফের শুরু হয়।
সুপ্রিম কোর্ট যখন এমন রায় ঘোষণা করেন তখন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৪ তম অধিবেশনে অংশ নিতে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরে ছিলেন বরিস জনসন। কিন্তু আদালতের রায়ে ফের সংসদ অধিবেশন শুরু হলে দেশে ফিরেই বিমানবন্দর থেকে সংসদে গিয়ে এমন কথা বলে তিনি।
চলতি মাসের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন পাঁচ সপ্তাহের জন্য পার্লামেন্ট অধিবেশন স্থগিত করেন। বিরোধীদের অভিযোগ কট্টর ব্রেক্সিটপন্থী প্রধানমন্ত্রী চুক্তি ছাড়াই যুক্তরাজ্যকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বের করে আনার জন্য পার্লামেন্ট স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
সুপ্রিম কোর্ট প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করার পর অনেকে সেই রায়কে অভূতপূর্ব, ঐতিহাসিক, অসাধারণ, যুগান্তকারী হিসেবে বর্ণনা করেন। সুপ্রিম কোর্টের ১১ জন বিচারপতি সর্বসম্মতভাবে রায়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন যেভাবে পার্লামেন্ট অধিবেশন স্থগিত করেছিলেন, তা বেআইনি।
সুপ্রিম কোর্ট রায়ে বলেছেন, ‘আগামী ৩১শে অক্টোবর ব্রেক্সিট কার্যকরের সময়সীমার আগে পার্লামেন্টকে তার দায়িত্ব পালন করা থেকে বিরত রাখা ছিল প্রধানমন্ত্রীর ভুল পদক্ষেপ।’ সুপ্রিম কোর্টের প্রেসিডেন্ট লেডি হেল রায় ঘোষণা করেন।
গতকাল প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের সময় ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বিরোধীরা চিৎকার চেচামেচি শুরু করেন। প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন প্রধানমন্ত্রী বরিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, ‘তিনি ওই কাজের জন্য (প্রধানমন্ত্রিত্ব) উপযুক্ত না। আইনের প্রতি কোনো শ্রদ্ধা নেই তার।’
এসএ/পিআর