‘মহাকাশের প্রথম অপরাধ’ তদন্ত করছে নাসা
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা মহাকাশে ঘটে যাওয়া ‘প্রথম অপরাধের’ এক অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, একজন নভোচারী মহাশূন্য থেকে পৃথিবীতে তার এক সাবেক জীবনসঙ্গীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বেআইনিভাবে ঢুকে পড়েছেন।
নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকার অনলাইন প্রতিবেদন অনুযায়ী, মহাকাশচারী অ্যানি ম্যাক্লেইন আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস) থেকে ওই অ্যাকাউন্টে ঢোকার কথা স্বীকার করেন। তবে তিনি দাবি করেন যে, এর মাধ্যমে কোন আইন ভঙ্গ হয়নি।
তার জীবনসঙ্গী সামার ওর্ডেন মার্কিন ফেডারেল ট্রেড কমিশনের কাছে এই বিষয়ে অভিযোগ করেছেন বলে জানা যাচ্ছে। এই ঘটনার পর মিজ ম্যাক্লেইন পৃথিবীতে ফিরে এসেছেন।
আইনজীবীর মাধ্যমে তিনি নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, মহাকাশ থেকে সামার ওয়ার্ডেনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দেখতে চেয়েছেন যে সেখানে সংসার এবং তাদের সন্তানের পেছনে খরচের জন্য যথেষ্ট টাকাপয়সা রয়েছে কী না।
ম্যাক্লেইনের স্ত্রী এবং মার্কিন বিমান বাহিনীর গোয়েন্দা কর্মকর্তা ওয়ার্ডেন সমকামী দম্পতি। তারা ২০১৪ সালে বিয়ে করেন। কিন্তু ২০১৮ সালে মিজ ওয়ার্ডেন বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করেন।
বেআইনিভাবে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দেখার অভিযোগ দায়েরের পর নাসার তদন্ত বিভাগ দুজনের সঙ্গেই যোগাযোগ করেছে। অ্যানি ম্যাক্লেইন মার্কিন সামরিক অ্যাকাডেমি ওয়েস্ট পয়েন্ট-এর গ্র্যাজয়েট। পাস করার পর সেনাবাহিনীর পাইলট হিসেবে তিনি ইরাকে ৮০০ ঘণ্টা যুদ্ধকালীন দায়িত্ব পালন করেন।
তারপর তিনি টেস্ট পাইলট হন এবং ২০১৩ সালে নাসার পাইলট পদের জন্য নির্বাচিত হন। তিনি ছয়মাস আইএসএস-এ অবস্থান করেন।
মহাকাশে কোন আইন কাজ করে?
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন বা আইএসএস-এর মালিকানা পাঁচটি দেশের। দেশ পাঁচটি হলো, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপান এবং কানাডা। মহাশূন্যে যে কোন মহাকাশচারী এবং যন্ত্রপাতির ওপর এই দেশগুলোর নিজস্ব আইন কার্যকর হবে বলে আইনি কাঠামো তৈরি করা হয়েছে।
সুতরাং কোন কানাডিয়ান নাগরিক যদি মহাকাশে গিয়ে কোন অপরাধ করেন, তাহলে তিনি কানাডিয়ান ফৌজদারি আইনের আওতায় পড়বেন। একইভাবে রুশ নভোচারীরা রাশিয়ার আইনের অধীন থাকবেন।
মহাকাশে ইউরোপকে একটি দেশ হিসেবে দেখা হয়। সেখানে ইউরোপীয় আইন বলবৎ থাকবে। তবে চাইলে ইউরোপের কোন দেশ তার জাতীয় আইন প্রয়োগ করতে পারবে বলে বিধান রয়েছে। মহাকাশ থেকে অপরাধী প্রত্যর্পণের বিধানও রয়েছে।
অপর কোন দেশের নাগরিক মহাশূন্যে অপরাধ করলে দ্বিতীয় কোন দেশ তাকে ফেরত চাইতে পারবে। মহাশূন্যে সম্ভাবনা এখন বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। মহাকাশে ঘটা অপরাধের বিচার ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তাও তাই বাড়ছে।
সূত্র : বিবিসি বাংলা
এসএ/এমকেএইচ